হযরত আলী (রাঃ) এর উক্তি । অমূল্য বাণী সমাবেশ
হযরত আলী (রাঃ) তিনি ছিলেন বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর চাচাতো ভাই এবং ইসলামের ৪র্থ খলিফা। তাঁর সময়কাল ছিল ৬৫৬-৬৬১ সাল পর্যন্ত। তাছাড়া । তিনি ২৩ অক্টোবর ৫৯৮ সালে পবিত্র মক্কার কাবা শরিফের ভিতরে জন্মগ্রহণ করেন। শিশুকাল থেকেই তিনি হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর সাথে লালিত পালিত হয়েছেন। মাত্র ১০ বছর বয়সে তিনি সর্বপ্রথম নবুয়াতের ডাকে সাড়া দিয়ে ইসলাম গ্রহণ করেন। তাছাড়া তিনিই ছিলেন ইসলামের ইতিহাসের প্রথম পুরুষ যিনি ইসলাম গ্রহন করেন। তিনি প্রায় সকল যুদ্ধেই মোহাম্মদ (সাঃ) এর সাথে অংশগ্রহন করতেন। বদর যুদ্ধে তিনি অনেক সাহসীকতার পরিচয় দেন। যার কারনে হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) তাঁকে জুলফিকার নামক তরবারি উপহার দিয়েছিলেন। তার পর যখন তিনি খাইবারের কামুস দুর্গ জয় করেন, তখন হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) তাঁকে “আসাদুল্লাহ” বা আল্লাহর সিংহ নামে উপাধি দেন। তিনি প্রায় ২৯ বছর যাবত ইমামের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছিলেন খুবই সাহসী এবং জ্ঞানী। তাছাড়া তিনি ছিলেন অলৌকিক ইসলামিক শক্তির অধিকারী।
যেমনঃ একদিন একবার জনগণ বৃষ্টির জন্য আলী (আ.)’র কাছে গিয়ে আবেদন করায় তিনি দোয়া করার সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টি বর্ষণ শুরু হয়। এতো বৃষ্টি হলো যে এবার জনগণ বলতে লাগলো: খুব বেশি বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে তিনি আবারও দোয়া করায় বৃষ্টি কমে যায়। তেমনি আরোও অনেক ঘটনা রয়েছে। তিনি ছিলেন খুবই সাহসী। যার কারনে তিনি অনেক যুদ্ধ জয় করেছেন।
মুলজিম নামে এক খারেজী বিষাক্ত ছুঁড়ি দিয়ে মাথায় জখম করায় কুফার মসজিদে ২৮শে জানুয়ারি ৬৬১ সালে নামাজ পড়া অবস্থায় তিনি (গুপ্ত হত্যার কারণে) শাহাদাৎ বরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিলো ৬০ বছর। আত্মপ্রকাশের আজকের আয়োজনে থাকছে, হযরত আলী (রাঃ) এর উক্তি ও অমূল্য বাণী সমাবেশ।
হযরত আলী (রাঃ) এর উক্তি ও অমূল্য বাণীসমূহ
ইসলামের জন্য নিবেদিত প্রাণ হযরত আলী (রাঃ), তাঁর জীবনদশায় বোধশক্তি হবার পর থেকেই মহানবী (সাঃ) এর পাশে ছিলেন এবং নিজের জীবনকে আল্লাহর সেবায় উৎসর্গ করেছিলেন। হযরত আলী (রাঃ) এর উক্তি ও বাণীগুলোকে পাঁচ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যেকোন
রচনার ভাগসমূহ
জ্ঞান নিয়ে উক্তি হযরত আলী (রাঃ) এর অমূল্য বাণী
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) পবিত্র হাদীস শরীফে বলেছেন – “আমি জ্ঞানের শহর হলে হযরত আলী সেই জ্ঞানের দরজা”। তাঁর অসীম জ্ঞান এবং প্রজ্ঞা মুসলিম বিশ্বকে এক নতুন দিগন্ত দিয়েছিল। জ্ঞান নিয়ে হযরত আলী (রা:) এর উক্তি ও বাণীসমূহ নিম্নরুপ।
হযরত আলী (রাঃ) এর জ্ঞান নিয়ে উক্তি
“কথা বল পার্থক্য-জ্ঞানসহ, প্রশ্ন-প্রতিবাদ কর প্রমাণসহ। কেননা মুখ তো পশু-প্রাণীরও থাকে; কিন্তু তারা জ্ঞান-বুদ্ধি-ভদ্রতা থেকে বঞ্চিত হয়ে থাকে।”
“জ্ঞানী ব্যক্তি আগে চিন্তা করে পরে কথা বলে, বোকা ব্যক্তি আগে কথা বলে পরে চিন্তা করে।”
“সেই ব্যক্তিই সবচেয়ে জ্ঞানী ও প্রজ্ঞাবান যিনি পরম করুণাময় আল্লাহর দয়ার ব্যাপারে আশা ও আত্মবিশ্বাস না হারানোর জন্য মানুষকে উপদেশ দেন।”
“জ্ঞানের মত সম্পদ আর নেই, অজ্ঞতার মতন দারিদ্র আর নেই।”
“যে ব্যক্তি নিজের হিসাব নিজে নেয় সে লাভবান হয়। সে নিজেকে ভুলে থাকে সে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যে ভয় পায় সে নিরাপদ হতে পারে। যে উপদেশ গ্রহণ করে সে বিচক্ষণ হয়। আর যে বিচক্ষণ হয় সে বোধ লাভ করে। আর যে বোধশক্তি লাভ করে সে জ্ঞানের অধিকারী হয়।”
“যে ব্যক্তি কোরআন বুঝতে পেরেছে তার হাতে সকল জ্ঞানের চাবি এসে গেছে।”
হযরত আলী (আ.) মৃত্যু সম্পর্কে বলেছেন : ‘প্রস্থান (অর্থাৎ দুনিয়া থেকে চলে যাওয়া) অতি নিকটে। সুতরাং সে ব্যক্তিই জ্ঞানী যে মৃত্যুকালে নিয়ে যাওয়ার মতো পাথেয় সঞ্চয় ও প্রস্তুত করে রাখে।
– নাহজুল বালাগা, উক্তি নং ১৭৮
“কারো সাথে বাক্যলাপ না হওয়া পর্যন্ত তাকে তুচ্ছ জ্ঞান করোনা।”
“অল্প বিদ্যায় আমল বিনষ্ট হয়। শুদ্ধ জ্ঞানই আমলের পুর্ব শর্ত।”
“জ্ঞান ও বুদ্ধিমত্তা যত বাড়বে , বক্তব্য তত কমবে ।”
” হীনতম জ্ঞান জিহ্বায় থাকে এবং উচ্চমানের জ্ঞান কর্মের মাঝে প্রকাশ পায় ।”
“মানুষের জ্ঞানের একটি হিংসাত্মক কাজ হলো আত্মম্ভরিতা।”
“বুদ্ধিমান লোক নিজে নত হয়ে বড় হয়, আর নির্বোধ ব্যক্তি নিজেকে বড় বলে অপদস্ত হয়।”
জ্ঞান নিয়ে অন্যান্য মনিষীদের উক্তিগুলো জেনে নিন।
-
এ. পি. জে. আবদুল কালামের উক্তি । জীবন । সমাজ । অনুপ্রেরণামূলক বাণী সমাবেশ
-
সুফী, দার্শনিক ইমাম গাজ্জালীর উক্তি । জ্ঞান-অন্বেষী জীবনমুখী উপদেশ বাণীসমূহ
হযরত আলী (রাঃ) এর উক্তি ও জীবনবোধ
হযরত আলী (রাঃ) তাঁর চমৎকার জীবনবোধের জন্য সর্ব্জন স্বীকৃত। তাঁর শাসনামলে তিনি তাঁর জীবনবোধের পরিচয় দিয়েছেন। নিম্নে হযরত আলী (রাঃ) এর জীবনবোধ সম্পর্কিত উক্তিগুলো উপস্থাপন করা হলো।
“ বুদ্ধিমানেরা কোনো কিছু প্রথমে অন্তর দিয়ে অনুভব করে, তারপর সে সম্বন্ধে মন্তব্য করে। আর নির্বোধেরা প্রথমেই মন্তব্য করে বসে এবং পরে চিন্তা করে। ”
“ মানুষের চরিত্র সত্য ও সুন্দর হলে তার কথাবার্তাও নম্র ভদ্র হয় ”
“ অসৎ লোক কাউকে সৎ মনে করে না, সকলকেই সে নিজের মতো ভাবে ”
“ সব দুঃখের মূল এই দুনিয়ার প্রতি অত্যাধিক আকর্ষণ ”
“ যে নিজের মর্যাদা বোঝে না অন্যেও তার মর্যাদা দেয় না! ”
“ স্বাস্থ্যের চাইতে বড় সম্পদ এবং অল্পে তুষ্টির চাইতে বড় সুখ আর কিছু নেই ”
“ কৃপণতা সকল বদভ্যাসের সম্মিলিত রুপ। এটা এমনি এক লাগাম যা দ্বারা যে কোন অন্যায়ের দিকে টেনে নেওয়া চলে। ”
“ অভ্যাসকে জয় করাই পরম বিজয় ”
“ আত্মীয়ত্যাগী ধনী অপেক্ষা আত্মীয়বত্সল গরিব ভালো ”
“আত্মতুষ্টি নিশ্চিতভাবে নির্বুদ্ধিতার লক্ষণ।”
“নীচ লোকের প্রধান হাতিয়ার হচ্ছে অশ্লীল বাক্য।”
“বিপদে অস্থিরতা নিজেই একটি বড় বিপদ।”
“সম্মুখে তারিফ করে দুষমন সে জন ।”
“মানুষ উত্তম নিয়তের কারণে সওয়াব/পুরস্কারপ্রাপ্ত হয়, যা অনেকক্ষেত্রে ভালো আমলের পরও পাওয়া যায় না। কেননা নিয়তের ক্ষেত্রে লোক-দেখানো বা লৌকিকতার সুযোগ নেই।”
“সৎমানুষের এটাও অন্যতম গুণ যে, তাদের ইচ্ছা করে মনে রাখতে হয় না; তাদের কথা এমনিতেই মনে পড়ে।”
“শব্দ-কথা’মানুষের ইচ্ছাধীন দাস হয়ে থাকে; তবে তা বলার আগ পর্যন্ত। বলে ফেললে, মানুষ তার দাসে পরিণত হয়।”
“হীনব্যক্তির সম্মান করা ও সম্মানীয় ব্যক্তির অপমান করা একই প্রকার দোষের।”
“সততার মাধ্যমে একজন নিরীহ প্রকৃতির লোকও যে মর্যাদার অধিকারী হয়, বুদ্ধিমানেরা রকমারী কলাকৌশল প্রয়োগ করেও তার নিকটে পৌঁছতে পারে না।”
“যে পৃথিবীকে বিশ্বাস করে, পৃথিবী তার সাথে ছলনা করে।”
“বিশ্বাসহীন ধনী সব থেকে গরিব।”
“প্রতিটি মানুষের মূল্য তার যোগ্যতায়।”
“যে মানুষ আপন মর্যাদার সীমা বুঝে তার কোনো ধ্বংস নেই।”
“মানুষ তার জিহ্বার নীচে লুক্কায়িত থাকে।”
“যুগের (স্বভাব প্রকৃতির) সঙ্গে মানুষের সাদৃশ্য পিতৃ-সাদৃশ্যের চেয়ে অধিক।”
“মানুষ যা জানে না তার প্রতি বিরূপ হয়ে থাকে।”
“অভাব বিচক্ষণ ব্যক্তিকেও যুক্তির ক্ষেত্রে নির্বাক করে দেয়। অভাবী যেন নিজ দেশেই পরবাসী।’
“মানুষ সব বুঝে বেঘোর, মৃত্যু আসা মাত্র জেগে উঠবে।”
“দুনিয়া যখন কারো প্রতি প্রসন্ন হয় তখন অন্যের গুণাবলীও তাকে ধার দেয়, কিন্তু যখন অপ্রসন্ন হয় তখন তার নিজস্ব গুণাবলীও ছিনিয়ে নেয়।”
“হৃদয়সমূহ একত্র করো এবং তা ধরে রাখতে হেকমতের আশ্রয় গ্রহণ করো । কেননা শরীরের ন্যায় হৃদয়ও ক্লান্তি ও একঘেয়েমী বোধ করে।”
“সবচেয়ে সাহসী ও বীর্যবান ব্যক্তি হলো সেই যে স্বীয় কামনা বাসনার খেয়াল খুশির উপর বিজয় লাভ করতে সক্ষম।”
“সব দুঃখের মূল এই দুনিয়ার প্রতি অত্যাধিক আকর্ষণ।”
“অজ্ঞদেরকে মৃত্যুবরণ করার পূর্বেই মৃত অবস্থায় কাল যাপন করতে হয় এবং সমাধিস্থ হবার পূর্বেই তাদের শরীর কবরের আঁধারে সমাহিত; কেননা তাদের অন্তর মৃত, আর মৃতের স্থান কবর।”
অন্যান্য জ্ঞানী গুণীদের জীবনবোধ জেনে নিতে ফলো করুন নিম্নলিখিত লিংক।
হযরত আলী (রাঃ) এর উপদেশ বাণী
হযরত আলী (রাঃ) তাঁর প্রজ্ঞার মাধ্যমে যেসব উপদেশ আমাদের দিয়ে গিয়েছেন তাঁর মাঝে কল্যান নিহিত। হযরত আলী (রাঃ) এর উপদেশ থেকে জীবন ও জগত সম্পর্কে জানতে পারি।পাশাপাশি ইসলাম ধর্ম ও আল্লাহ সম্পর্কে সঠিক পথ খুঁজে পাওয়া যায়।
“যে কাউকে একাকী উপদেশ দেয়, সে তাকে সজ্জিত করে; আর যে কাউকে সবার সামনে উপদেশ দেয়, সে তাকে আরও বিগড়িয়ে ফেলে।”
“ মনে রেখো তোমার শত্রুর শত্রু তোমার বন্ধু, আর তোমার শত্রুর বন্ধু তোমার শত্রু ।”
“ যা তুমি নিজে করো না বা করতে পারো না, তা অন্যকে উপদেশ দিও না ।”
“ কার্পণ্য ত্যাগ করো নতুবা তোমার আপনজনরা তোমার জন্য লজ্জিত হবে এবং অপরে তোমাকে ঘৃণা করব।”
“ ধনসম্পদ হচ্ছে কলহের কারণ, দুর্যোগের মাধ্যমে কষ্টের উপলক্ষে এবং বিপদ আপদের বাহন ।”
“ মানুষের সাথে তাদের বুদ্ধি পরিমাণ কথা বলো।”
“ বুদ্ধিমান ও সত্যবাদী ব্যক্তি ছাড়া আর কারো সঙ্গ কামনা করো না। ”
” পুণ্য অর্জন অপেক্ষা পাপ বর্জন শ্রেষ্ঠতর ।”
“ যা সত্য নয় তা কখনো মুখে এনো না । তাহলে তোমার সত্য কথাকেও লোকে অসত্য বলে মনে কর। ”
“ বড়দের সম্মান কর, ছোটরা তোমাকে সম্মান করবে। ”
“মন্দ লোক অন্যদের সম্পর্কে ভালো ধারণা করতে পারে না, সর্বোচ্চ সে তাদেরকেও নিজের মত মনে করে।”
“ তোমার যা ভাললাগে তাই জগৎকে দান কর, বিনিময়ে তুমিও অনেক ভালো জিনিস লাভ কর। ”
“অনুশোচনা খারাপ কাজকে বিলুপ্ত করে আর অহংকার ভালো কাজকে ধ্বংস করে।”
“অনর্থক কামনা নিজেই একটি ধ্বংসাত্বক সঙ্গী, আর বদ অভ্যাস সৃষ্টি করে একটি ভয়াবহ শত্রু।”
“গোপন কথা যতক্ষণ তোমার কাছে আছে সে তোমার বন্দী । কিন্তু কারো নিকট তা প্রকাশ করা মাত্রই তুমি তার বন্দী হয়ে গেলে।”
“ছোট পাপকে ছোট বলিয়া অবহেলা করিও না, ছোটদের সমষ্টিই বড় হয়।”
“তোমার যা ভাল লাগে তাই জগৎকে দান কর, বিনিময়ে তুমিও অনেক ভালো জিনিস লাভ করবে।”
“তুমি পানির মত হতে চেষ্টা কর, যে কিনা নিজের চলার পথ নিজেই তৈরী করে নেয় ।পাথরের মত হয়োনা, যে নিজে অন্যের পথরোধ করে |”
“নেককারদের সাহচর্য দ্বারা মানুষ শুধু মঙ্গলই পেয়ে থাকে। কেননা বাতাস যখন ফুলের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়, তাতে নিজেই সুগন্ধিযুক্ত হয়ে যায়।”
“কখনও কারও সামনে নিজের সততা-ভালো হওয়ার কথা বলতে যাবে না। কেননা তোমার প্রতি যার বিশ্বাস আছে, তার কাছে তেমনটির প্রয়োজনই নেই; আর তোমার প্রতি যার ভক্তি-বিশ্বাস নেই, সে তা মেনে নেবে না।”
“জীবজন্তুর মাঝে থাকে প্রবৃত্তি-কামনা এবং ফেরেশতাদের মধ্যে থাকে বুদ্ধি-বিবেক; কিন্তু মানুষের মধ্যে থাকে উভয়টি। মানুষ যদি বিবেক-বুদ্ধিকে চেপে যায়, পশু হয়ে যায় আর যদি প্রবৃত্তি-কামনা-বাসনাকে চেপে যায়, ফেরেশতাসম হয়ে যায়।”
“জীবনযাপনকে প্রয়োজনের মধ্যে সীমীত রাখো; শখ-বাসনার দিকে নিয়ে যাবে না। চাহিদা একজন ফকিরেরও পূর্ণ হয়ে যায়। আর শখ-বাসনা একজন রাজা-বাদশাহরও পূর্ণ হয় না।”
“কোনো মানুষের ভালো বা গুণের কিছু জানলে, তা বল, প্রকাশ কর। কিন্তু কোনো ত্রুটি পেলে সেক্ষেত্রে তোমার নিজের গুণের পরীক্ষা বলে মনে করবে।”
“সেসব মানুষের ওপর আস্থা-ভরসা রাখবে, যারা তোমার তিনটি বিষয় মূল্যায়ন করে। ক. তোমার হাসি-আনন্দের ক্ষেত্রে অব্যক্ত দয়া পোষণ করে, খ. তোমার ক্রোধের ক্ষেত্রে অব্যক্ত ভালোবাসা পোষণ করে, গ. তোমার মৌনতার ক্ষেত্রে গোপনমুখ হিসেবে কাজ করে।”
“আত্মীয়ত্যাগী ধনী অপেক্ষা আত্মীয়বত্সল গরিব ভালো”
“অল্প দান করতে কখনো লজ্জিত হইও না,কারণ অভাবীকে ফিরিয়ে দেয়া তার থেকে বেশী লজ্জার।”
“দ্রুত ক্ষমা করে দেয়া সম্মান বয়ে আনে আর দ্রুত প্রতিশোধ পরায়ণতা অসম্মান বয়ে আনে।”
“হে, লেখক! তুমি যা লিখছ তার সবই একজন ফেরেশতা নজরদারী করছেন।তোমার লেখালেখিকে অর্থপূর্ণ করো কেননা অবশেষে একদিন সব লেখাই তোমার কাছে ফেরত আসবে এবং তুমি যা লিখেছ তার জন্য তোমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।”
“অতিরিক্ত সমালোচনা করবেন না। অতিরিক্ত সমালোচনা ঘৃণা এবং খারাপ চরিত্রের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়।”
“কারো অধঃপতনে আনন্দ প্রকাশ করো না, কেননা ভবিষ্যত তোমার জন্য কী প্রস্তুত করে রেখেছে সে সম্পর্কে তোমার কোন জ্ঞানই নেই।”
“রেগে যাবার সময়ের এক মূহুর্তের ধৈর্য রক্ষা করে পরবর্তী সময়ের হাজার মূহুর্তের অনুশোচনা থেকো।”
“আপনার দ্বারা নেক কাজ সাধিত হলে আল্লাহ তা’আলার প্রশংসা করুন এবং যখন অসফল হবেন তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন।”
“লোকের যে সমস্ত দোষ ত্রুটির উপর আল্লাহ পর্দা দিয়ে রেখেছেন তা তুমি প্রকাশ করার চষ্টা করো না।”
“আপনার দ্বারা নেক কাজ সাধিত হলে আল্লাহ তা’আলার প্রশংসা করুন এবং যখন অসফল হবেন তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন।”
” আল্লাহ্ যখন তোমাকে স্বাধীন বানিয়েছেন তখন তুমি অন্যের গোলাম হয়ো না।”
” আমি তোমাদেরকে পাচটি বিষয় বলে দিচ্ছি, যদি তোমরা উটে চড়ে দ্রুত তা খুজে নাও তবে এর সুফল পাবে :
ক/ আল্লাহ ছাড়া আর কিছুতে আশা স্হাপন না করা
খ/ নিজের পাপ ছাড়া আর কোন কিছুকে ভয় না করা
গ/ যা নিজে জানো না সে বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হলে ‘আমি জানি না’ বলতে লজ্জাবোধ না করা
ঘ/ যা নিজে জানো না তা অন্যের কাছ থেকে শিক্ষা করতে লজ্জা না করা
ঙ/ এবং ধৈর্য্য ধারণ করতে অভ্যাস করা , কারণ দেহের জন্য মাথা যেরূপ ঈমানের জন্য ধৈর্য্য তদ্রুপ ।”
“আল্লাহর শাস্তি থেকে রক্ষা পাবার দুটি উপায় ছিল- একটি তুলে নেয়া হয়েছে অপরটি তোমাদের সম্মুখে রয়েছে । সুতরাং যেটা তোমাদের সম্মুখে রয়েছে তা তোমাদের মানতে হবে । রক্ষা পাবার যে উপায়টি তুলে নেয়া হয়েছে তা হলো আল্লাহর রাসূল (সা.) এবং যেটি এখনো আছে তা হলো ক্ষমা প্রার্থনা করা ।”
“তিনটি আমল অত্যন্ত কঠিন___
প্রচন্ড রাগের সময় কাউকে ক্ষমা করা, নিদারুণ অভাব থাকা সত্ত্বেও মানুষকে দান করা, একান্ত নির্জনতায় নিজেকে পাপ
থেকে বিরত রাখা।”
“লোকে তোমার প্রশংসা করলে খুশি হইও না। লোকে তোমার নিন্দা করলেও দুঃখ পেও না। কারণ লোকের কথায় কয়লা কখনো সোনা হয় না।”
“তুমি জান্নাত চেওনা বরং তুমি দুনিয়াতে এমন কাজ কর যেন জান্নাত তোমাকে চায়।”
“স্বপ্ন আর আকাঙ্ক্ষার উপর ভরসা করে বসে থেকো না, কেননা এটা হলো মূর্খ মানুষের পুঁজি।”
“(অন্তরে) যে যাই গোপন করে তা তার জিহ্বার ফাঁকে বের হয়ে পড়ে এবং মুখণ্ডলের অভিব্যক্তিতে ধরা পড়ে।”
“তোমাদের কেউ যেন আপন প্রতিপালক ছাড়া অন্য কারো আশা না করে এবং তাঁর ‘শাস্তি’ ছাড়া অন্য কিছুকে ভয় না করে। তোমাদের কেউ যেন যা জানে না তা শিখতে এবং না জানা বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হলে ‘জানি না’ বলতে সংকোচ বোধ না করে।”
“অভিজাত লোকের হামলা সম্পর্কে সতর্ক হও যখন সে ক্ষুধার্ত হয়। আর ইতর লোকের হামলা হতে সতর্ক হও যখন সে পূর্ণ উদর হয়।”
“পাচটি জিনিস খুব খারাপ, আলেমের খারাপ কাজ ,শাসকের লালসাবৃত্তি, বৃদ্ধের জেনাকারিতা, ধনীর কৃপণতা, নারীর নির্লজ্জতা।”
“সেই ব্যক্তির পক্ষেই সর্বাধিক সৎকর্ম করা সম্ভব,যে ক্রোধ নিয়ন্ত্রণে সক্ষম।”
“কেউ স্বীকৃতি না দিলেও তুমি তোমার সদাচরণ অব্যাহত রাখবে।”
“কখন বুঝবে একটি দেশ ও সমাজ নষ্ট হয়ে গেছে? যখন দেখবে
দরিদ্ররা ধৈর্য্যহারা হয়ে গেছে , ধনীরা কৃপণ হয়ে গেছে , মূর্খরা মঞ্চে বসে আছে, জ্ঞানীরা পালিয়ে যাচ্ছে এবং শাসকরা মিথ্যা কথা বলছে।”
অন্যান্য ইসলামিক মনীষীদের উপদেশসমূহ জেনে নিন।
বন্ধু নিয়ে উক্তি হযরত আলী (রাঃ) এর উক্তি
বন্ধুত্ব এবং বন্ধু আল্লাহর পরম নিদর্শন। আমাদের প্রত্যেকের জীবনে এমন একজন বন্ধু প্রয়োজন যাকে আমরা হৃদয়ের সব কিছু খুলে বলতে পারি এবং তাঁর বিপদে এগিয়ে যেতে পারি। হযরত আলী (রাঃ) ছিলেন মহানবী (সাঃ) এর পরম বন্ধু। বন্ধু এবং বন্ধুত্ব নিয়ে হযরত আলী (রাঃ) উক্তি ও বাণীগুলো নিম্ন্রুপ।
“বন্ধুত্ব করার মত কোন যোগ্যলোক পাওয়া না গেলেও অযোগ্যদের সাথে বন্ধুত্ব করতে যেও না।”
“ শত্রুরা শত্রুতা করতে কৌশলে ব্যর্থ হলে তারপর বন্ধুত্বের সুরত ধরে। ”
“আগুন্তক সে যার কোন বন্ধু নেই।”
” ভালোবাসা সবাইকে নিবেদন করো; তবে তাকে সর্বাধিক ভালোবাস, যার অন্তরে তোমার জন্য তোমার চেয়েও অধিক ভালোবাসা বিদ্যমান।”
“ রাজ্যের পতন হয় দেশ হতে সুবিচার উঠে গেলে, কারণ সুবিচারে রাজ্য স্থায়ী হয়। সুবিচারকের কোন বন্ধুর দরকার হয় না। ”
বন্ধু ও বন্ধুত্ব নিয়ে অন্যান্য জ্ঞানী, গুণীদের উক্তিগুলো জেনে নিন।
ধর্ম নিয়ে হযরত আলী (রাঃ) উক্তি
হযরত আলী (রাঃ) ধর্মীয় ব্যাপারে খুব সচেতন ছিলেন। একনিষ্ঠ আল্লাহর বান্দা হিসেবে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। হযরত আলী (রাঃ) এর ধর্মীয় উক্তি ও বাণীগুলো নিম্নরুপ।
“মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে, প্রেম-ভালোবাসার জন্য; আর বস্তু সৃষ্টি করা হয়েছে ব্যবহারের জন্য। সমস্যার জন্ম নেয়, যখন বস্তুকে ভালোবাসা হয় এবং মানুষকে ব্যবহার করা হয়।”
” দুনিয়ার প্রতি ভালোবাসা যত বেশি হবে, আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা ততোটাই কম হবে।”
“অযাচিত দানই দান, চাহিলে অনেক সময় চক্ষুলজ্জায় লোকে দান করে, কিন্তু তা দান নহে।”
ভদ্রতা উন্নত চরিত্রের লক্ষণ, আর শিষ্টতা উৎকৃষ্ট ইবাদতের লক্ষণ।”
“যৌবনের অপচয়কৃত সময়ের ক্ষতি অবশ্যই পূরন করতে হবে, যদি তুমি সন্তোষজনক সমাপ্তি অনুসদ্ধান করো ।”
“ত্বরিত ক্ষমা-প্রদর্শন ভদ্রতার নিদর্শন। আর ত্বরিত প্রতিশোধ গ্রহণ হীনতার পরিচায়ক।”
“দ্রুত ক্ষমা করে দেয়া সম্মান বয়ে আনে আর দ্রুত প্রতিশোধ পরায়ণতা অসম্মান বয়ে আনে ।”
“দুনিয়াতে সব চেয়ে কঠিন কাজহচ্ছে নিজেকে সংশোধন করা আর সব চেয়ে সহজ কাজ হচ্ছে অন্যের সমালোচনা করা।”
“নিজের মহানুভবতার কথা গোপন রাখো, আর তোমার প্রতি অন্যের মহানুভবতার কথা প্রচার করো।”
“দুনিয়া ও আখেরাত দুই সতীনের ন্যায়। স্বামী যেমন একজনকে খুশি করতে চাইলে অন্যজন ক্ষিপ্ত হয়। তেমনি কেউ দুনিয়ার জীবনকে সুখময় করতে চাইলে আখেরাতের ক্ষতি এবং আখেরাতকে নির্বিঘ্ন করতে চাইলে দুনিয়ার জীবনের ক্ষতি স্বীকার করা ছাড়া গত্যন্তর নেই।”
“ভয় কর আল্লাহ (পাক) কে তাহলে তোমাকে আর কাউকে ভয় করতে হবে না।”
“আল্লাহর (পাক) কথা হ্রদয়ের জন্য ওষুধ।”
“ইসলামের যথার্থ ফেকাহবিদ সে যে আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ করে না, আল্লাহর দয়ার প্রতি হতাশ করে না এবং আল্লাহর শাস্তি থেকে নিরাপদ বলে মনে করিয়ে দেয় না ।”
“অক্ষমতা একটি বিপদ, ধৈর্যের অর্থ সাহসিকতা, ভোগ বিলাসিতায় নির্মোহতা অমূল্য সম্পদ এবং ধর্মানুরাগ জান্নাত লাভের মাধ্যম।”
“প্রকৃত দ্বীনদারী পার্থিব স্বার্থ ত্যাগের মাধ্যমেই সম্ভব।”
সৃষ্টিকর্তা ও ধর্ম নিয়ে অন্যান্য মনীষীদের উক্তি জেনে নিন।
-
সৃষ্টিকর্তা, অতীন্দ্রিয়বাদ এবং সুফিবাদ নিয়ে রুমির উক্তি সমূহ । হৃদয়গ্রাহী বানী
-
চাণক্যের নীতি । আলোচিত ও বাছাইকৃত বাণী, শ্লোক ও উক্তি সমাবেশ
হযরত আলী (রাঃ) এর চিন্তাধারা ও উক্তি
হযরত আলী (রাঃ) একজন বিজ্ঞ ও চিন্তাশীল ব্যক্তি ছিলেন। জটিল বিষয়কেও তিনি সহজভাবে চিন্তা করতেন এবং তা থেকে পরিত্রাণের পথ খুঁজে বের করতেন। চিন্তা নিয়ে হযরত আলী (রাঃ) এর উক্তি ও বানী নিম্নরুপ।
“যে নিজে সতর্কতা অবলম্বন করে না, দেহরক্ষী তাকে বাঁচাতে পারে না।”
“হীনব্যক্তির সম্মান করা ও সম্মানীয় ব্যক্তির অপমান করা একই প্রকার দোষের।”
” ধনসম্পদ মাটিতুল্য; আর মাটি সংরক্ষণের যথাযোগ্য স্থান হচ্ছে পদতলে। তা যদি মাথার ওপর রাখা হয়, সেটা কবরের নামান্তর হয়। আর কবর তো জীবিত মানুষের জন্য নয়।”
” অসৎ লোকের ধন -দৌলত পৃথীবিতে সৃষ্ট জীবের বিপদ -আপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।”
“বুদ্ধিমানেরা বিনয়ের দ্বারা সম্মান অর্জন করে,আর বোকারা ঔদ্ধত্যের দ্বারা অপদস্ত হয়।”
“কখনো কখনো একটি মাত্র শব্দ বিরাট বঞ্চনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।”
“শিষ্টাচার হলো চির-নতুন পোশাক এবং চিন্তা হলো স্বচ্ছ আয়না।”
“সৎ কাজ অল্প বলে চিন্তা করো না, বরং অল্পটুকুই কবুল হওয়ার চিন্তা কর।”
চিন্তা নিয়ে অন্যান্য জ্ঞানীদের উক্তি জেনে নিন।
অহংকার নিয়ে হযরত আলী (রাঃ) এর বাণী
ইসলাম ধর্মে বলা হয়েছে, অহংকারী ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না। হযরত আলী (রাঃ) সবসময় অহংকারী ব্যক্তিদের ঘৃণা করেছেন। অহংকার নিয়ে হযরত আলী (রাঃ) এর বাণীগুলো নিম্নরুপ।
“মানুষের কিসের এত অহংকার, যার শুরু একফোটা রক্তবিন্দু দিয়ে আর শেষ হয় মৃত্তিকায়।”
“সময় ও সম্পদ এমন দুইটি জিনিস, যা মানুষের ইচ্ছাধীন নয়। সময় মানুষকে বাধ্য করে, আর সম্পদ অহংকারী করে তোলে।”
“মূর্খলোক সম্পদের জন্য অন্তরের শান্তি বিসর্জন দেয়; আর বুদ্ধিমান ব্যক্তি মনের শান্তির জন্য সম্পদ লুটিয়ে দেয়।”
“ধন সম্পদের অহংকার থেকে আল্লাহর পানাহ চাও।এটা এমন একরোগ, যা মানুষকে ধ্বংসের শেষ পর্যায়ে পৌছিয়ে দেয়।”
পাপ নিয়ে উক্তি হযরত আলী (রাঃ) উক্তি
পাপিষ্ট ব্যক্তি কখনো কল্যাণ বয়ে আনতে পারেনা। পাপ নিয়ে হযরত আলী (রাঃ) এর উক্তির মাধ্যমে সে কথাই প্রকাশিত হয়েছে।
“পাপ লুকানোর চেষ্টা করে কোনোদিন সফলকাম হতে পারে না। পাপের কথা স্বীকার করে যদি কেউ তা ত্যাগ করার চেষ্টা করে তবে তার পক্ষে সফলতা লাভ করা স্বাভাবিক।”
“যেসব পাপকাজ তোমরা গোপনে করে থাকো সেগুলোকে ভয় করো, কেননা সেসব পাপের সাক্ষী বিচারক স্বয়ং নিজেই।”
“হে আমার সন্তান! আল্লাহকে এমনভাবে ভয় করো যে সমগ্র মানবজাতির ভালো কাজের সমতূল্য সওয়াব নিয়েও যদি তুমি আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করো তবু তিনি তা কবুল করবেন না; এবং আল্লাহর ব্যাপারে এমন আশাবাদী হও যে সকল মানুষের করা পাপকাজের সমপরিমাণ পাপ নিয়েও যদি তুমি আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করো তবু তিনি তোমায় ক্ষমা করে দিবেন।”
হযরত আলী (রাঃ) তাঁর ছেলের উদ্দেশ্যে এই কথাটি ব্যক্ত করেন ।
“কল্যাণপ্রাপ্ত তো সেই ব্যক্তি যার নিজের পাপসমূহ তাকে অন্যদের পাপের দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ থেকে বিরত রাখে।”
“খোদার শপথ! যদি ষড়যন্ত্র অপছন্দনীয় ব্যাপার না হতো, তাহলে আমি হতাম বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ চতুর লোক৷ কিন্তু প্রত্যেক প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করাই পাপ৷ আর প্রতিটি পাপই হলো অকৃতজ্ঞতা৷ আর প্রতিটি হঠকারিতা বা চাতুর্য এমন এক পতাকার মতো যেই পতাকার মাধ্যমে কেয়ামতে তা চিনতে পারা যাবে৷ খোদার শপথ! আমি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নতজানু হবো না, কিংবা কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও অক্ষম হবো না।”
“ছোট পাপকে ছোট বলিয়া অবহেলা করিও না, ছোটদের সমষ্টিই বড় হয়।”
“একান্ত নির্জনতায় নিজেকে পাপ থেকে বিরত রাখো।”
“পাপের কাজ করে লজ্জিত হলে পাপ কমে যায়, আর পুণ্য কাজ করে গর্ববোধ করলে পুণ্য বরবাদ হয়ে যায়।”
“নফস হলো প্রবৃত্তির পূজারী। সহজগামী আমোদ-প্রমোদের অভিলাসী, কু-প্ররোচনায় অভ্যস্ত, পাপাচারে আসক্ত, আরাম প্রিয় ও কর্মবিমুখ। যদি তাকে বাধ্য করো তাহলে সে দুর্বল হয়ে পড়বে। আর যদি তাকে ছেড়ে দাও তাহলে (তুমি) ধ্বংস হয়ে যাবে।”
“সর্বাপেক্ষা করুণার পাত্র হচ্ছে ঐ ব্যক্তি-
যে আলেম ব্যক্তির উপর জাহেলরা কতৃত্ব করে। যে ভদ্রব্যক্তি কোন ইতর লোকের অধীন হয়ে পড়ে। ঐ সৎব্যক্তি যার মাথার উপর পাপিষ্ঠ চেপে বসে।”
“সর্বাপেক্ষা আহাম্মক ঐ ব্যক্তি যে অন্যের বদঅভ্যাসের প্রতি ঘৃণা পোষণ করে, এবং লোক চক্ষুর আড়ালে নিজেই সেই সব বদঅভ্যাসে জড়িত থাকে।”
“অত্যাচারীর বিরুদ্ধে অত্যাচারিতের অন্তরে যে বিদ্বেষাগ্নির জন্ম হয়, তা অত্যাচারীকে ভস্ম করেই ক্ষান্ত হয় না, সে আগুনের শিখায় অনেক কিছুই দগ্ধীভূত হয়।”
“অন্যায় সূচনাকারী যালেম আগামী দিন (অর্থাৎ কিয়ামতের দিন) স্বীয় হাত কামড়ে খাবে।”
ন্যায়, নীতি, নিষ্ঠার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ছিলেন হযরত আলী (রাঃ)। তিনি তাঁর জীবনদশায় ১০ বছর বয়স থেকেই মহানবী (সাঃ) কে সঙ্গ দিয়ে গিয়েছেন। তাঁর সাথে প্রতিটি যুদ্ধে বীরত্বের সাথে অংশ নিয়েছেন। তাঁর আদর্শ ও আল্লাহর কুরআনকে প্রতিষ্ঠিত করতে আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। হযরত আলী (রাঃ) এর উক্তি ও বাণী আমাদের সকলের জীবনের পথ প্রদর্শক হোক।