সৃষ্টিকর্তা, অতীন্দ্রিয়বাদ এবং সুফিবাদ নিয়ে রুমির উক্তি সমূহ । হৃদয়গ্রাহী বানী
পারস্যের কবি মাওলানা জালালউদ্দিন মুহাম্মদ রুমি(র) কে অনেকে দরবেশ কবি বলে থাকেন। জগতবিখ্যাত কবি রুমি জন্মগ্রহন করেন ১২০৭ সালে, আফগানিস্থানের বালখ শহরে। যদিও রুমির জন্মস্থান নিয়ে দ্বিমত রয়েছে তবে আজ সেদিকে যাবো না আমরা। রুমি একইসাথে মুসলিম কবি, আইনজ্ঞ, ধর্মতাত্ত্বিক, সুফি এবং অতীন্দ্রিয়বাদি ছিলেন। অতীন্দ্রিয়বাদি বলতে এমন ব্যক্তিকে বুঝানো হয় যিনি সমাধিস্থ, ধ্যান অবস্থায়, সৃষ্টিকর্তার সাথে প্রত্যক্ষ সংযোগ স্থাপনের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তাছাড়া রুমির কবিতায় সুফিবাদের প্রভাব বিশেষভাবে লক্ষ্যনীয়। সুফিবাদ হলো এমন একটি ধারা যেখানে মানুষের আত্মা স্বর্গীয় সত্ত্বার সাথে মিলনে ব্যাকুল, পাগল এবং আত্মহারা হয়ে থাকে। রুমির কবিতায় সৃষ্টিকর্তার প্রতি তার পরম ভালবাসা, আত্মসমর্পণ তথা লীন হয়ে যাওয়ার এক পরম উপলব্দি অনুভব করা যায়। জালাল উদ্দিন রুমি ‘দীওয়ান’ এ বলেছেন-
‘সুফিরা মোহাম্মদের দিকে ঝুঁকে থাকে, যেমন ঝুঁকেছিল আবু বকর।’
জালালউদ্দিন রুমি তার পুরো জীবন কোরআনের আলোকে এবং নবী হযরত মোহাম্মদ (সা) এর আদর্শে গড়েছেন। তার কবিতায় সে প্রভাব ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত। মানিবিক আর্তি, সাত্ত্বিকতা, এবং সকল সৃষ্টির সৃষ্টিকর্তাকে প্রেম দিয়ে বুঝা এবং উপলব্দি তার কবিতাকে উচ্চমন্ডিত করেছে। সৃষ্টিকর্তাকে খুঁজে পেতে তিনি প্রেমের পথকেই বেঁছে নিয়েছেন। প্রেম নিয়ে রুমির বানীগুলো প্রায় হাজার বছর ধরে অমর। ঠিক এই কারনেই তিনি সকল ধর্ম, বর্ণ, গোত্রের মানুষের কাছে সমানভাবে জনপ্রিয়। ৮০০ বছর পরেও রুমির জনপ্রিয়তা ন্যূনতম ক্ষুন্য হয়নি। তার জনপ্রিয়তা দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। এই আর্টিকেলে সৃষ্টিকর্তা, অতীন্দ্রিয়বাদ এবং সুফিবাদ নিয়ে রুমির উক্তি সমূহ তুলে ধরার চেষ্টা করবো।
সৃষ্টিকর্তা, অতীন্দিয়বাদ এবং সুফিবাদ নিয়ে রুমির উক্তি সমূহ
মাওলানা জালালউদ্দিন মুহাম্মদ রুমি জীবন দশায় বেশ কয়েকজন ফকির দরবেশ এবং সুফির সাক্ষাত পেয়েছেন। ফকির-দরবেশ শামস তাবরিজির সাথে সাক্ষাৎ রুমির জীবনে ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে আসে এবং তার আধ্যাত্মিকতাকে অন্য স্তরে নিয়ে যায়। শামস তাবরিজি ছিলেন সমাজ-সংসার এবং নিয়ম কানুন বিরোধী উন্মাদ ধরনের আধ্যাত্মিক পুরুষ। রুমি ধীরে ধীরে শামসের ভিতর স্বর্গীয় উপস্থতি টের পান এবং শামস্যের মাধ্যমে নিজের ভিতরের আধ্যাত্মিকতাকে অনুসন্ধান করেন এবং সৃষ্টিকর্তার প্রতি পরম নিবেদন জাগিয়ে তুলেন। শামস তাবরিজি, জালালউদ্দিন রুমির ভিতর সুফিবাদের যে বীজ বপন করেন, সেই সুফিবাদ নিয়ে রুমির উক্তি সমূহ নীচে তুলে ধরা হলো-
“আমি খোদাকে খুঁজলাম , কিন্তু কেবল নিজেকেই খুঁজে পেলাম। আর যখন নিজেকে খুঁজলাম তখন কেবল খোদাকেই খুঁজে পেলাম।”
“তুমি নীরব হয়ে যাও! একমাত্র খোদা’ই তাঁর হাত দিয়ে তোমার হৃদয়ের বোঝাসমূহ দূর করতে পারেন!”
“মুহাম্মদের আলো কোন অগ্নিপুজারি বা ইহুদিকে পরিত্যাগ করে না। তাঁর সৌভাগ্যের ছায়া যেন সবার উপর উজ্জ্বল হয়! তিনি সুপথে নিয়ে আসেন যারা পথভ্রষ্ট হয়েছিল মরুভূমিতে।”
“এসো, এসো, যেখানেই থাকো!
এসো, তুমি তোমার শপথ সহস্রবার ভঙ্গ করলেও এসো,
এসো, আবার এসো,
আমাদেরটা তো হতাশার কাফেলা নয়!!! “
হে প্রভু আসলে তোমার আত্মা আমার আত্মা একই।তুমি আমার ভিতর আছ।আমি তোমার ভিতর আছি।আমরা দুইজন ই একে অন্যের ভিতর লুকিয়ে আছি।
“আল্লাহর কোরআনের কাছে যাও, তাতে আশ্রয় নাও
সেখানে নবীর আত্নার সাথে মিশ
বইটি বহন করে নবীর বিভিন্ন অবস্থার কথা
সমুদ্রের ন্যায় তাঁর পবিত্র মহিমা প্রকাশ কর।”
“যেখানেই আমি তাকাই প্রভু কেবল তোমাকে দেখতে পাই।”
“যদি তুমি অন্তর জয় করতে চাও,তাহলে ভালোবাসার বীজ বুনো।যদি তুমি জান্নাতে যেতে চাও,তাহলে অন্যের পথে কাটা বিছানো বন্ধ করে দাও।”
“জীবনের বোঝা গুলা হাসি মুখে স্বাচ্ছন্দ্য এ বয়ে যাও,কারন ধৈর্য ই হল এক মাত্র চাবি যা দিয়ে কেবল তুমি এটা জয় করতে পারবে।”
“যতক্ষণ পর্যন্ত আমার প্রাণ আছে আমি কোরআনের দাস।
আমি মোহাম্মদের রাস্তার ধূলিকণা, নির্বাচিত ব্যক্তি।
যদি কেউ আমার বলা বাণী ছাড়া অন্য কিছু আমার নামে চালায়,
আমি তাকে ত্যাগ করব সেসকল শব্দের প্রতি ক্ষুব্দ হয়ে।”
“কখনো দুঃখী হয়ো না।প্রভুই হতাশার মুহুর্তে আশা পাঠান।ভুলে যেয়ো না প্রবল বর্ষন সব সময় অন্ধকার মেঘ থেকেই আসে।”
“পাপ পুন্য এর ধারনা থেকে বহু দুরে হে প্রভু আমি তোমার দেখা পেলাম।”
“মোহাম্মদের আলো আরো এক হাজার প্রশাখা হল(জ্ঞানের), এক হাজার, যাতে এখনকার জীবন এবং এর পরবর্তী জীবনে এটি সর্বশেষ সীমা পর্যন্ত কবলিত হয়। যদি মোহাম্মদের চেরা থেকে এরকম একটি শাখা খুলে, হাজারও ভিক্ষু এবং যাজক তাদের মিথ্যা বিশ্বাসের দড়িকে তাদের কোমর থেকে ছিঁড়ে ফেলবে।”
“আমি আমার দুই চোখকে “বিরত” রেখেছি
এই পৃথিবী আর আখিরাতের অভিলাষ থেকে যা আমি মুহাম্মদ থেকে শিখেছি।”
“শরণার্থী! পালিয়ে কোরানে আশ্রয় নাও
যেখানে নবীদের আত্মা মিশেছে!
নবীদের কথা কিতাবে বর্ণিত রয়েছে মহিমার পবিত্র সমুদ্রের মাছ
আমি যতদিন বেঁচে আছি
আমি কোরানের দাস, মুহাম্মদ মুস্তাফার (সাঃ) পথের ধুলো!!
“তোমার জীবনে যেই আসুক না কেন, তার জন্য কৃতজ্ঞ হও! কারন অন্তরালে থেকে খোদা প্রত্যেককেই তোমার জন্য পথপ্রদর্শক হিসেবে পাঠিয়েছেন।”
“স্রষ্টা তোমার অন্তরে আধ্যাত্মিক গোপন তত্ত্ব লিখে রাখেন, যেখানে তারা নীরবে নিহিত থাকে আবিষ্কারের অপেক্ষায়।”
“নীরবতাই আল্লাহর ভাষা, বাকি সবকিছু নেহাতই দুর্বল অনুবাদ!”
“আমি আমার দুই চোখকে “বিরত” রেখেছি
এই পৃথিবী আর আখিরাতের অভিলাষ থেকে যা আমি মুহাম্মদ থেকে শিখেছি।”
“কখনও ভেঙ্গে পড় না, কারন চরম হতাশার মধ্যেই প্রভু বেঁচে থাকার আশা প্রেরন করে থাকেন।”
“যিনি সমস্ত গুপ্ত বিষয় জানেন, সর্বজ্ঞাতা…. তিনি এখানেই!!!
তোমার দেহের প্রধান রগ থেকেও নিকটে আছেন তিনি!!!”
“স্রষ্টার কাছে পৌঁছানোর অজস্র পথ আছে। তার মাঝে আমি প্রেমকে বেছে নিলাম।”
“প্রতিটি মুহূর্তই সৃষ্টিকর্তার শত বার্তা বহন করে;”
”হে প্রভু”-বলে ক্রন্দনরত প্রতিটি ডাকের সাড়া দেন তিনি, শতবার বলে-এইতো আমি।”
“তুমি হচ্ছো পাতা-
অদৃশ্য বাতাসের দ্বারা বিক্ষিপ্ত;
তুমি কি জানো না যে তোমায় কী পরিচালিত করছে?”
“যে তার জ্ঞান দিয়ে মনের খারাপ ইচ্ছা গুলোকে জয় করতে পারে সে স্বর্গের ফেরেশতাদের থেকেও বেশি সম্মানিত বলে বিবেচিত হয়।”
“প্রভু! তুমি তো সব জাগায় বিরাজমান,তবুও আমি তোমাকে পাগলের মত খুঁজছি।”
“সৃষ্টিকর্তার প্রেমে আপন আত্মা খুইয়ে দাও,
বিশ্বাস কর; এ ব্যতীত কোন পথ নেই।”“তুমি যদি প্রভুর দয়া চাও, তবে দুর্বলের প্রতি দয়ার হাত বাড়িয়ে দাও!”
“অতীত আর ভবিষ্যৎ নিয়ে কেনই বা আমি এত চিন্তায় মগ্ন হবো , যখন প্রভুর ভালবাসার স্বর্গীয় আলো বর্তমানে জ্বলজ্বল করছে!!”
“হে প্রেম,
হে মানস-পট,
স্বর্গ-পথের সন্ধানে যাও;
স্রষ্টার ক্ষেত্র সন্ধানে রত হও।”
“হাতুড়ে ডাক্তারে জীবন হারানোর আশংকা, আর হাতুড়ে মোল্লায় ঈমান হারানোর আশংকা থাকে।”
“চিনি বেশী সুমিষ্ট, না যিনি চিনির স্রষ্টা?
চাঁদ বা তার আলো বেশী সুন্দর, না যিনি চাঁদের স্রষ্টা?
পড়ে থাক্ চাঁদ ও চিনির মত ক্ষুদ্র বিষয়
মহান আল্লাহ জানেন সব বিষয়-আশয়
সবকিছুর তিনিই স্রষ্টা!!”
“ঈশ্বরের প্রেমে তোমার আত্মাকে উৎসর্গ কর।শপথ করে বলছি তা ব্যতীত অন্য কোন পথ নেই।”
“হে আকৃতির পূজারী! তুমি আর কতকাল বাহ্যিক আকৃতির পূজা করবে? অথচ বাহ্যিক আকৃতির পূজার জন্য তোমার অর্থহীন নির্বোধ প্রাণ বাহ্যিক আকৃতির কল্পনা বাহ্যিক আকৃতির দাসত্ব থেকে মুক্তি পায় নি।”
“অন্বেষণকারীদের পথে জ্ঞানী- মূর্খ সব একই।
তাঁর ভালোবাসায় পরিচিত-অপরিচিত সব একই।
এগিয়ে যাও! ভালোবাসার অমৃত সুধা পান করো।
সে বিশ্বাসে, মুসলিম-পৌত্তলিক সব একই।”
“নীরবতাই আল্লাহর ভাষা, বাকি সবকিছু নেহাতই দুর্বল অনুবাদ!”
“এখন তুমি চুপ করে থাকো !! ভেতরে যে কথা বলতে চায়, তাকে কথা বলতে দাও। তিনি দরজা সৃষ্টি করেছেন, দরজার তালাও তৈরি করেছেন এবং এটা খোলার চাবিও তিনিই তৈরি করেছেন।”
“আপনা থেকে বিমুখ হয়োনা। স্রষ্টা অবশ্যই তোমার সাথে রয়েছেন।”
“স্রষ্টা তোমার অন্তরে আধ্যাত্মিক গোপন তত্ত্ব লিখে রাখেন, যেখানে তারা নীরবে নিহিত থাকে আবিষ্কারের অপেক্ষায়।”
“মহানবী মুস্তাফা (সাঃ) আল্লাহর নুরের তাজাল্লী দর্শনের আয়না স্বরূপ,
এই আয়নাতে আল্লাহর পবিত্র যাতের সবকিছু প্রতিফলিত হয়।”
“আমি অনেক মন্দির,গীর্জা, মসজিদ ঘুরেছি, কিন্তু দৈবসত্ত্বাকে কেবল নিজের মধ্যেই অনুধাবন করতে পেরেছি।”
“শরণার্থী! পালিয়ে কোরানে আশ্রয় নাও
যেখানে নবীদের আত্মা মিশেছে!
নবীদের কথা কিতাবে বর্ণিত রয়েছে মহিমার পবিত্র সমুদ্রের মাছ
আমি যতদিন বেঁচে আছি
আমি কোরানের দাস, মুহাম্মদ মুস্তাফার (সাঃ) পথের ধুলো!!
“অহম হলো মানুষ ও স্রষ্টার মধ্যবর্তী পর্দা।”
“গন্তব্যস্থান নাইবা থাকল, তুমি চলতে থাকো
দূরত্ব অতিক্রম করে দেখার চেষ্টা কোরো না।
ওটা তো মানুষের কাজ নয়।
ভেতরে চলাফেরা কর কিন্তু এমনভাবে নয়
যেন ভয় তোমাকে চালাচ্ছে।
সুফিদের কথা মুহূর্তের মধ্যে বাস কর।
ঈশা (দ.) বলতেন, ‘আগামীকালের কথা ভেবো না’।”
“তুমি ঘুমন্ত অথবা জাগ্রত, লেখো কিংবা পড়, যাই করো না কেন, এক মুহূর্তও খোদা কে স্মরণ না করে থেকো না!!!!”
“কয় দিনই বা এই বাড়িতে আমরা থাকবো ??? !!! এখানে আমরা সবাই প্রভুর অতিথিতি হয়ে রয়েছি।”
“প্রভু আমি তোমার উপস্থিতি আমার অন্তরে খুঁজে পাই
যদিও তুমি বিশ্বের সব জাগায় বিরাজমান।”
“অতীত আর ভবিষ্যৎ নিয়ে কেনই বা আমি এত চিন্তায় মগ্ন হবো , যখন প্রভুর ভালবাসার স্বর্গীয় আলো বর্তমানে জ্বল জ্বল করছে।”
“তুমি সব জাগায় বিরাজমান,তবুও আমি তোমাকে পাগলের মত খুজতেছি।”
“প্রভুকে পাবার অনেক পথ আছে, আমি ভালবাসার পথকে এর জন্য বেঁছে নিয়েছি।”
“কেন তুমি প্রভুকে খুঁজতে প্রত্যেক দরজায় দরজায় গিয়ে আঘাত করছ??
যাও ,নিজের অন্তরের দরজায় গিয়ে আঘাত কর।”
“একটা নিঃশ্বাস বাকি থাকতেও যদি তুমি আমার কাছে ফিরে আসো ,তাহলেও আমি সদা প্রভু তোমাকে স্বাগত জানাব।”
“বাস্তবে আমার আর তোমার আত্মা একই ,তুমি আমার মাঝে আছো আর আমি তোমার মাঝে,আমরা একজন আরেকজনের মাঝে পরস্পর লুকিয়ে আছি।”
“এমন এক সময় আসবে যখন প্রভুর ভালবাসায় মগ্ন হওয়া ছাড়া সব কিছুই তোমার কাছে অর্থহীন মনে হবে।”
“যে তার জ্ঞান দিয়ে মনের খারাপ ইচ্ছা গুলোকে জয় করতে পারে সে স্বর্গের ফেরেশতাদের থেকেও বেশি সম্মানিত বলে বিবেচিত হয়।”
“প্রকৃতির প্রতিটা জিনিস বসন্তে ভালোভাবে প্রকাশিত হয়,আবার শীতে তা ঝরে যায় ,কিন্তু প্রভুর স্বর্গীয় ভালোবাসা কোন নিদিষ্ট ঋতুর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।”
“তোমার অন্তরের যে কেন্দ্রবিন্দুতে প্রান রুপী ঈশ্বর থাকেন,সেটাই হল এই পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর জায়গা।”
“সব সময় সতর্ক থাক।কারন প্রভুর লীলা খেলার সৌন্দর্য মাঝে মাঝে হটাৎ করে দেখা যায় । এটা কোন রকম সতর্কবানি ছাড়াই স্বচ্ছ হৃদয়ে অবতরন করে থাকে।”
“যে শরীয়তকে তোমরা মহা জ্ঞানের ভাণ্ডার মনে করে থাক,তাকে আমি অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছি ,শরীয়তের জ্ঞানের আমার কোণই অভাব ছিল না।কিন্তু পরে বুঝতে পেরেছি যে সেই জ্ঞান দ্বারা আমি প্রকৃত জ্ঞানী ছিলাম না,বরং ছিলাম একটা আস্ত পাগল।”
“শরীয়তের আলেমরা হাজারো জ্ঞানের প্রতিভা রাখে,কিন্তু নিজের পায়ে কুঠার আঘাতকারি দূষিত আত্মা সম্পর্কে কোন জ্ঞানই রাখে না।”
“মূর্খরা জাহিরি মসজিদের সম্মান করে কিন্তু আল্লাহর অলি-আউলিয়াদের কে অত্যাচার করে ।
ওহে গর্দভগণ ! ঐ (মসজিদ) হইতেছে অস্থায়ী নশ্বর বস্তু কিন্তু মানূষের হৃদয় হইতেছে শাশ্বত সত্য-অমর ।
আল্লাহ প্রেমিকদের হৃদয় ব্যতিত কোন সত্য স্থায়ী মসজিদ নাই।”
“প্রভুর দরজায় আঘাত কর,সে তোমার জন্য তার দরজা উন্মুক্ত করে দিবেন।
নিজেকে দুনিয়া থেকে অদৃশ্য করে ফেল,সে তোমাকে সূর্যের প্রখর আলোর মত দীপ্তিমান করে তুলবেন।
নিজের মান-সম্মান আর অহংকার ধ্বংস করে ধুলায় লুটিয়ে যাও,সে তোমাকে জান্নাতের শিখরে টেনে তুলবেন।
নিজেকে একদম শূন্য করে ফেল,সে তোমাকে সব কিছুর বাদশাহ বানিয়ে দিবেন।”
“তোমার জীবনের প্রতিটি মুহূর্তের জন্য প্রভুর কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর।
তাহলে তোমার চেহরা সূর্যের মত চমকাতে থাকবে এবং তখন যে কেউই তোমাকে দেখবে সে স্বর্গীয় আনন্দ ও শান্তি অনুভব করবে।”
“তুমি প্রভুকে কেন দূরে খোঁজ করছো,সে তোমার অতি নিকটে কিন্তু তুমি জানো না।যেমন কেউ তার হিরার-হাড় পাগলের মত খুঁজে বেড়ায় এক কক্ষ থেকে অন্য কক্ষে,অথচ তা তার গলায়ই রয়েছে।”
“তুমি যদি মারিফত তথা গোপন কিছুর জ্ঞান লাভ করতে চাও,তাহলে অবশ্যই
তোমাকে নিজের মান-মর্যাদা ও লজ্জা ভুলতে হবে।
তুমি প্রভুর প্রেমিক হয়ে এখনো চিন্তা করছো যে “লোকে কি বলবে”?? !!”
একনজরে দেখে নিতে পারেন >> কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের উক্তি মেলা । বাস্তবিক কিছু চরিত্রের উন্মেষ
রুমি খোদার কাছে পৌঁছানোর উপায় হিসেবে প্রেম, কবিতা, সংগীত এবং চক্রাকার নৃত্যের তালে তালে ধ্যান করাকেই বেঁচে নেন। রুমি এমন একজন মুসলিম পন্ডিত, সুফি ছিলেন যিনি ইসলামকে গম্ভীরভাবে নিয়েছিলেন। তার আধ্যাত্মিক দৃষ্টিভঙ্গি সম্প্রসারিত হয়েছে সীমিত সাম্প্রদায়িক সংস্পর্শে।পাশাপাশি তিনি সর্বদা হযরত মোহাম্মদ সাল্লালাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং সৃষ্টিকর্তা এবং সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টির অনুগত ছিলেন। রুমি সাম্প্রদায়িকতার ঊর্ধ্বে সৃষ্টিকর্তার প্রেমে মশগুল ছিলেন এবং তারই বন্দনা করেছেন। সুফিবাদ নিয়ে রুমির উক্তি এবং সৃষ্টিকর্তার প্রতি প্রেমের পাশাপাশি জীবন দর্শন নিয়ে রুমির বানী সমূহ আজো মানুষকে জীবন চলার পথে অনুপ্রেরণা দিয়ে যাচ্ছে। আধ্যাত্মিক কবি রুমি ১৭ ডিসেম্বর ১২৭৩ সালের মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
এই প্রবন্ধটি লিখার সময় উইকিপিডিয়া, bdtoday24 সহ বিভিন্ন বাংলা ব্লগ থেকে সাহায্য নেয়া হয়েছে। সুফিবাদ, অতীন্দিয়বাদ এবং সৃষ্টিকর্তা নিয়ে রুমির উক্তি সমূহ সব একসাথে নিয়ে আসা সম্ভব হয়নি। আশা করছি অন্য কোনো পোষ্টে তা চলে আসবে। আত্মপ্রকাশের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
6 Comments
[…] অনেক উক্তি করে গিয়েছেন। পাশাপাশি সৃষ্টিকর্তা, অতীন্দিয়বাদ এবং সুফিবাদ… গুলো আজো জ্বলজ্বল করছে মসনবিতে। এই […]
[…] রুমি তার লেখা এবং কবিতার মাধ্যমে অনেক সুফিবাদ নিয়ে অনেক উক্তি করে গিয়েছেন যা আজো চির অমর। তার […]
[…] সৃষ্টিকর্তা, অতীন্দ্রিয়বাদ এবং সুফি… […]
[…] অনেক উক্তি করে গিয়েছেন। পাশাপাশি সৃষ্টিকর্তা, অতীন্দিয়বাদ এবং সুফিবাদ… গুলো আজো জ্বলজ্বল করছে মসনবিতে। এই […]
[…] সৃষ্টিকর্তা, অতীন্দ্রিয়বাদ এবং সুফি… […]
[…] মাওলানা জালালউদ্দিন রুমির সৃষ্টিকর্তা বিষয়ক উক্তিগুলো পড়ুন উক্ত লিংকে > সৃষ্টিকর্তা নিয়ে রুমির উক্তি […]