রুপকথা কি? রুপকথার গল্প এবং অজ্ঞাত ইতিহাস । রুপকথার বিবর্তন

অনেক দিন আগের কথা… শুনলেই আমাদের মনে যে স্মৃতিচারণার অবতরণ হয়, তা হলো আমাদের দাদী, নানীদের মুখে শোনা সেই সব রুপকথার গল্প। রুপাঞ্জেল, ব্যাঙ রাজপুত্র, সিন্ডারেলা বা সাত বামুনের গল্প কোনোটিই আমাদের মন থেকে মুছে যায় না। বড় হবার পরেও সেই রুপকথার গল্প গুলোর প্রতি সমপরিমাণ ভালবাসা রয়ে যায়, নিয়ে যায়  শৈশব স্মৃতিচারণে। আত্মপ্রকাশের আজকের আয়োজনে থাকছে রুপকথার গল্প নিয়ে বিস্তারিত। জানা যাবে রুপকথা সংজ্ঞা এবং রুপকথার ইতিহাস। যেসব গল্পকে রুপকথা হিসেবে জেনে আসছি সেগুলো আসলেই রুপকথা কিনা! তা নিয়েও ছোট একটি পর্ব রয়েছে, যার বিস্তারিত পরবর্তীতে নিয়ে আসা হবে।

রুপকথা কি?

রচনার ভাগসমূহ

বাংলা ডিকশনারি খুঁজে দেখলে দেখা যায় রুপকথা অর্থ ছেলে ভুলানো অবাস্তব কল্পিত কাহিনী বা আখ্যায়িকা। সমার্থক হিসেবে বলা যায় উপকথা, লোককাহিনী, পুরাণ কথা, ফ্যান্টাসি বা অলীক কল্পনায় রচিত কোনো গল্প বা ঘটনাই হলো রুপকথা। এ নিয়ে ক্যামব্রিজ ডিকশনারি বলছে-

“রুপকথা হল একটি সনাতন ঐতিহ্যবাহী গল্প, যা শিশু বা ছোট বাচ্চাদের জন্য তৈরী করা হয় এবং গল্পের মধ্য কল্পিত চরিত্র এবং জাদুবিদ্যার সংমিশ্রণ থাকবে।”

মেরিয়াম ওয়েবস্টার ডিকশনারি মতে-

“রুপকথা হল শিশুদের জন্য তৈরী গল্প, যাতে অবাস্তব, অলীক কল্পনাবশত উদ্ভট কাহনী এবং সত্ত্বা থাকবে।”

মার্গারেট উইলিসের মতে-

“রুপকথা হল এমন একটি অভাবনীয় গল্প বা ঘটনা যা শেষে ভালো এবং সুখী সমাপ্তি থাকবে।”

বাংলা উইকিপিডিয়া মতে-

রূপকথা হল ছোটগল্পের একটি ধরন, যাতে মূলত লোককথা ও ফ্যান্টাসি ধরনের চরিত্র, যেমন বামন, ড্রাগন, ক্ষুদ্র পরী, পরী, দৈত্য, যক্ষ, গবলিন, গ্রিফিন, মৎস্যকন্যা, সবাক প্রাণী, ট্রোল, কাল্পনিক ঘোড়া, বা ডাইনি, এবং জাদু বা জাদুমন্ত্র তোলে ধরা হয়।

রুপাঞ্জেল-রুপকথার-গল্প-rupanzel-fairytale
রুপাঞ্জেল এবং তাঁর বিখ্যাত সোনালী চুলের বেণী ( image: Pinterest)

কিছু গবেষকের মতে- রুপকথার গল্প বা ফেইরি টেল শব্দটি জার্মান শব্দ ‘Marchen’ থেকে এসেছে। যার অর্থ ওয়ান্ডার টেল এবং এটি রুপকথার একটি জনরা। রুপকথার গল্প গুলোর প্রাথমিক লক্ষ্য শিশুরা হলেও সব গল্পই শিশুদের জন্য তৈরী করা হয়নি। আবার রুপকথা মানেই পরীদের গল্প হতে হবে এমন ও নয়। তবে রুপকথা মানেই অলীক কল্পনা এবং জাদুবিদ্যার প্রভাব থাকবে।

রুপকথার গল্প এর উদাহরনঃ

পৃথিবী ইতিহাসে অগনিত রুপকথার গল্প রয়েছে। তন্মধ্যে জনপ্রিয় কিছুর নাম নিচে দেয়া হলো –

  • সাত ভাইয়ের এক বোন
  • কাক পরী
  • রামপেলস্টিলস্কিন
  • রুপাঞ্জেল
  • দ্য প্রিন্সেন্স অ্যান্ড দ্য সী
  • মৎস্যকন্যা বা দ্য লিটল মারমেইড
  • স্নো অ্যান্ড হুয়াইট
  • বিউটি অ্যান্ড বিষ্ট
  • থাম্বেলিনা
  • ব্যাঙ রাজকুমার বা দ্য ফ্রগ প্রিন্স
  • দ্য রেড শো বা লাল জুতা
  • ইত্যাদি ( জনপ্রিয় বাংলা ম্যাগাজিন শো)

রুপকথার গল্পে ব্যবহৃত শব্দের প্রয়োগঃ

রুপকথার ঐতিহ্যবাহী এবং পুরাতন ভাষাঃ অনেক দিন আগের কথা, অনেক বছর আগে, একদা, গহীন বনে, সাহসী যুবক, সোনার পাখী ইত্যাদি।
রুপকথার সংখ্যা এবং প্যাটার্নঃ ৩,৭,১৩ এই সংখ্যাগুলো সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
রুপকথায় জাদু এবং জাদুবিদ্যায় চরিত্রে রূপান্তরঃ কথা বলা আয়না, ব্যাঙ রাজপুত্র, হরিণ রাজপুত্র, কাক পরী ইত্যাদি।
যুগল বৈপরীত্যঃ ভালো এবং শয়তান, ধনী এবং গরীর, সুন্দর এবং কুৎসিত, সবল এবং দুর্বল ইত্যাদি।
মূলভাব এবং রুপকঃ রাতের ভাষা
রুপকথার প্রধান বৈশিষ্টঃ সুখী সমাপ্তি এবং প্রধানত শিশুদের জন্য তৈরী। ( যদিও সব রুপকথায় সুখের সমাপ্তি থাকে না। রুপকথার আসল গল্পের অনেক বিষাদগার এবং বীভৎস বিষয় ছাঁট করা হয়, যখন এটি শিশুদের উপযোগী করে তুলে ধরা হয়েছে।)

রুপকথার সাথে লোককাহিনী, মিথ ও উপকথার পার্থক্য

আমরা অনেকেই লিজেন্ড বা লোককাহিনী, ফেবল বা উপকথাকেও রুপকথার অন্তর্ভুক্ত ধরে থাকি। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে রুপকথা, লোককাহিনী এবং উপকথা সবকয়টিই লোকসাহিত্যের আলাদা আলাদা জনরা এবং তাদের মধ্যে বিস্তর ফারাক্ রয়েছে।

লিজেন্ড বা লোককথাঃ মেরিয়াম ওয়েবস্টার এর মতে,

“লিজেন্ড বা লোককাহিনী হলো এমন একটি গল্প যা অতীত হতে এসেছে এবং ঐতিহাসিকভাবে তাঁর একটি জনপ্রিয়তা রয়েছে কিন্তু তার সত্যতা যাচাই অসম্ভব।”

অর্থাৎ লিজেন্ড বা লোককাহিনী হলো, এমন কোনো ব্যক্তিকে নিয়ে রচিত লোকসাহিত্য, যা ঐতিহাসিক এবং যার সত্যতা নিরুপন করা দুরূহ বা কঠিন। উদাহরণস্বরুপ কিং আর্থারের প্রচলিত কাহিনীগুলোর কথা বলা যায়। অতি লোভের ফল গল্পটিও লোককথা জনরায় পড়ে।


মিথঃ বাংলা ডিকশনারি মতে – প্রাচীনকাল থেকে পুরুষানুক্রমে প্রবহমান কাহিনী, বিশেষত কোনো জাতির আদি ইতিহাস সম্পৃক্ত বিশ্বাস ও ধারণা এবং নৈসর্গিক ঘটনাবলীর ব্যাখ্যা বা অতিকথা।

শোকেস-স্পাইডার-মিথ-showcase-spider-myth
শোকেস স্পাইডার গল্পটি মিথ। (Image: myths.e2bn.org)

ফেবল বা উপকথাঃ বাংলা ডিকশনারি অনুযায়ী জীবজন্তুর আচরণ ও কথাবার্তার মাধ্যমে নীতিকথা তুলে ধরার উদ্দেশ্যে রচিত কল্পকাহিনীই হলো ফেবল বা উপকথা।
ডিকশনারি ডট কমের মতে –

“ফেবল বা উপকথা হল, একটি ছোট গল্প যার মাধ্যমে নৈতিক শিক্ষা দেওয়া হয়ে থাকে এবং গল্পের চরিত্রগুলো জীবজন্তু এবং প্রানহীন বস্তু হয়ে থাকে।”

পিঁপড়া এবং ঘাস ফড়িং এর যে গল্পটি ফেবল বা উপকথা। হরিণ রাজপুত্র গল্পটিও উপকথার মধ্যে পড়ে।

উপরের আলোচনায় একটি বিষয় পরিষ্কার যে, রুপকথা উপকথা, মিথ এবং লোককাহিনী থেকে আলাদা। রুপকথায় মানুষ এবং জীবন্ত প্রান থাকা জরুরী। যা লোককাহিনীতেও রয়েছে। কিন্তু লোককাহিনী থেকে রুপকথাকে আলাদা করেছে অলীক কল্পনায় রচিত কিছু চরিত্র এবং জাদুবিদ্যা। যেমনঃ জ্বীন, পরী, দৈত্য, ডাইনী, রাক্ষস ইত্যাদি অতি কল্পিত চরিত্রগুলো।


রুপকথার গল্প এবং  ইতিহাসঃ

অনেক দিন আগের কথা… দিয়েই শুরু করতে হবে রুপকথার ইতিহাস। রুপকথার প্রকৃত ইতিহাস এপর্যন্ত সঠিকভাবে জানা যায় নি। আদৌ জানা যাবে, সে সম্ভাবনাও নেই। একমাত্র টাইম ট্রাভেল করে জানা সম্ভব।
তবে এভাবে শুরু করা যায়, রুপকথার ইতিহাস অতি প্রাচীন এবং তা কয়েক হাজার বছর পুরনো। সময়ের বিবর্তনের পাশাপাশি রুপকথার গল্পের অনেক বিবর্তন হয়েছে। একই রুপকথার গল্প ছড়িয়ে পড়েছে দেশ থেকে দেশে, মহাদেশ থেকে মহাদেশে। রুপকথার গল্পগুলো সময়ে সময়ে হয়েছে পরিবর্তিত এবং তাতে লেগেছে রঙ। যে দেশ, যে ভাষা তাঁরও ছোঁয়া লেগেছে। রুপকথা মুখে মুখেই ঘুরে বেরিয়েছে বছরের পর পর, প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম।

রুপকথার-বিবর্তন-fairytale-evolution
রুপকথার বিবর্তন

ফেইরি টেল বা রুপকথা শব্দটি ১৭০০ সালের শেষের দিকে প্রথম ব্যবহার করেন ম্যাডামি ডি অ্যাওলনয়। রুপকথার ইতিহাস সঠিকভাবে নিরুপন করা সম্ভব না হলেও বেশ কয়েকজন গবেষক তা নিয়ে অনবরত গবেষনা চালিয়েছেন। দুরহাম এবং লিসবন ইউনিভার্সিটি গবেষকদের মতে- রুপকথার গল্পগুলো হাজার বছরের পুরনো এবং কিছু গল্প ৬৫০০ বছর আগের ব্রোঞ্জ যুগের। বর্তমান সময়ে এসেও রুপকথা লিখার কাজ চলছে। দুরহাম ইউনিভারসিটি নৃবিজ্ঞানী ড. জামি তেহরানির মতে-

“জ্যাক এবং বিনসটকের গল্পটি ৫০০০ বছরের পুরনো যখন ইন্দো ইউরোপিয়ান ভাষাগুলো ভেঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে।”

গবেষনায় এটাও পাওয়া যায়, বিউটি এন্ড ডা বিষ্ট এবং রাম্পেলস্টিলস্কিন রুপকথার গল্পটি প্রায় ৪০০০ বছর আগের। লোককাহিনী স্মিথ অ্যান্ড ডেভিল প্রায় ৬০০০ বছর আগের গল্প। ১৯ শতকে রুপকথা লেখক গ্রিম ভাতৃদ্বয়ের বিশ্বাস ছিল, তাদের সংগৃহীত রুপকথার জনপ্রিয় গল্পগুলো যেমনঃ সিন্ডেরেলা, রেড রাইডিং হুড, হ্যানসেল অ্যান্ড গ্রিটেল, স্নো হুয়াইট ইত্যাদি ইন্দো-ইউরোপিয়ান ভাষার জন্মের আগে থেকে প্রচলিত।
পরবর্তীতে অন্যান্য চিন্তাবিদরা সেই মতবাদকে চ্যালেঞ্জ করেন এবং বলেন- অনেক গুলো গল্পই নতুন এবং মৌখিকভাবে প্রচলিত, রুপকথা প্রথম লিখিত অবস্থায় আসে ১৬ -১৭ শতকের দিকে। এ নিয়ে ড. জামি তেহরানী আরো বলেছেন-

“কিছু রুপকথার গল্প সাহিত্য রেকর্ডের আগে থেকে প্রচলিত হয়ে আসছে এবং কিছু পুরনো কাহিনী পুরুষানুক্রমে প্রহমান। ভাষান্তরে কিছু গল্প ল্যাটিন এবং গ্রিক অক্ষরেও দেখা যায় কিন্তু আমাদের অনুসন্ধান আরো পুরনোর দিকে পরামর্শ দেয়।”

ড. তেহরানী লোক সাহিত্যিক সারা গ্রেকা ডি সিল্ভার সাথে কাজ করেছেন, লিসবন ইউনিভার্সিটির প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তাঁর মতে –

“আমরা একটা বিষয় খুব ভালো ভাবে লক্ষ্য করেছি যে, এই গল্পগুলো কোনো প্রকার লিখিত রুপ ছাড়াই বছরের পর বছর ঠিকে রয়েছে।”

গবেষকগণ এই রিসার্চটি করার সময় একটি বায়োলজিক্যাল টুলকিট ব্যবহার করেছেন। সেখানে তাঁরা ট্রি সিস্টেমের মাধ্যমে ইন্দো-ইউরোপিয়ান ভাষাগুলোকে ব্যবহার করেছেন। যেখানে তাঁরা একটি রুপরেখা দেখিয়েছেন, কিভাবে রুপকথার গল্প গুলো সময়ের বিবর্তনে বছরের পর বছর একস্থান থেকে অন্যস্থানে প্রবাহিত হয়েছে।

খ্রিষ্টাব্দ অনুসারে রুপকথার ইতিহাস

রুপকথার আদিমূল পৌরাণিক মৌখিক গল্পকথকদের মধ্যে নিহিত। প্রতিটি সংস্কৃতির আলাদা বিশ্বাস ধারনা বা মিথ এবং নীতিকথামূলক উপকথা রয়েছে। বংশানুক্রমিক এই বিবর্তনের মাধ্যমেই আজকের রুপকথা। তবে এক্ষেত্রে একটি কথা বলে নেয়া ভালো, রুপকথার আজকের যে রুপ আমরা দেখি, অতি প্রাচীনকালে সেই একই রুপ ছিল না। অনেক রুপকথাতেই ভয়ানক এবং বীভৎস উপাদান ছিল। যেহেতু রুপকথার মূল উপজীব্য ছিল শিশুরা তাই সেগুলোকে বাদ দিয়েই রুপকথা বিবর্তিত হয়েছে। বর্তমানে অনেক রুপকথাই মিথ এবং উপকথার চাদর ঢেকে আছে। এখন জেনে নেয়া যাক, উৎপত্তি অনুসারে রুপকথা গুলো প্রচলনের সম্ভাব্য খ্রিষ্টাব্দ সমূহ।



 খ্রিষ্টাব্দ (১০০-২০০), প্রাচীন গ্রিস – ‘কিয়ূপিড এবং সাইকি’ লিখেছেন অ্যাপুলিয়াস।
 খ্রিষ্টাব্দ ( ৮৫০-৮৬০), চায়না – সিন্ড্রেলা
 খ্রিষ্টাব্দ ১৩০০, এই সময়ে ভাসমান গল্পকথকগণ মধ্যযুগীয় ইউরোপে রুপকথার গল্প গুলো ছড়িয়ে দেন।
 খ্রিষ্টাব্দ ১৫০০, এই সময়ে আরব্য রজনীর এক হাজার এক রাত প্রথম লেখ্যরুপে আসে।
 খ্রিষ্টাব্দ (১৫০০ এবং ১৫৫৩), এই সময় ইতালিতে গিইয়ানফ্রান্সেস্কো স্ট্রেপারোলা “দ্য প্লিসেন্ট নাইটস” পাবঅলিশ করেন। তাঁকে রুপকথার জনক বলা হয়ে থাকে।
 খ্রিষ্টাব্দ ১৬০০, ইতালিতে গিয়ামবাতিস্তা ব্যাসিল লিকেহ্ন ‘দ্য টেল অফ টেলস’। যা তাঁর মরণোত্তর ১৬৬৪ সালে পাবলিশ হয়। এই বইয়ে ‘পেট্রোসিনেলা ছিল, যা রুপাঞ্জেলের প্রথম ভার্সন।
 খ্রিষ্টাব্দ (১৬৯০-১৭১০)-এই সময়ে ফ্রান্সে সযালন আবিষ্কৃত হয়, যা বিশেষত কোনো মহিলার বাড়িতে গন্যমান্য বযক্তিদের নিয়মিত সমাবেশ এবং সেখানে রুপকথার গল্প শোনানো হত। ম্যারি ক্যাথরিন ডি এলুনি ‘কন্টে ডা ফিস’ নামে একটি টার্ম আবিষ্কার করেন এর জন্য।
 খ্রিষ্টাব্দ (১৬৯৭), ফ্রান্সের প্যারিসে ‘মাদার গোস টেলস’ পাবলিশ হয়। যার লেখক ছিলেন চার্লস প্যারাউল্ট।
 খ্রিষ্টাব্দ (১৬৯৭), চারলট্টে রোজ দা ফোরস তাঁর একটি রুপকথার গল্পের সংগ্রহ পাবলিশ করেন, যা আমরা রুপাঞ্জেল নামে জানি।
 খ্রিষ্টাব্দ (১৭৪০), গ্যাব্রিলি ডি ভিলিনিউভ ৩৬২ পৃষ্টার ‘বিউটি অ্যান্ড বিষ্ট’ লিখেন।
 খ্রিষ্টাব্দ (১৭৫৬), জিন-ম্যারি লে প্রিন্স ডে বিউমন্ট প্রথম শিশুদের উদ্দেশ্যে বিউটি অযান্ড বিষ্ট’ পাবলিশ করেন।
 খ্রিষ্টাব্দ (১৮১২), জার্মানিতে জ্যাকব উইলহেম গ্রিম ‘চাইল্ডহুড অ্যান্ড হাউজহোল্ড টেলস’ এর প্রথম ভলিউম পাবলিশ করেন।
 খ্রিষ্টাব্দ ১৮২৩ সালে গ্রেট ব্রিটেনে এডগার টেইলর প্রথম গ্রিমস টেলস এর রুপকথার গল্প গুলোকে ইংরেজীতে ট্রান্সলেট করেন এবং নামে দেন ‘জার্মান পপুলার স্টোরিস’। এই বইটির চিত্র অংকন করেন জর্জ ক্রুইকশাংক।
 খ্রিষ্টাব্দ(১৮২৫), জার্মানিতে শিশুদের জন্য গ্রিমসের প্রথম সংস্করণ বের হয়, যা ‘দ্য স্মল এডিশন’ নামে পরিচিত এবং এর চিত্রাঙ্কন করেন লুডুইগ গ্রিম।
 খ্রিষ্টাব্দ (১৮৩৫), ডেনমার্কে হ্যান্স ক্রিস্টিয়ান অ্যান্ডারসন লিখেন ‘ফেইরি টেলস টোল্ড ফর চিল্ড্রেন’।
 খ্রিষ্টাব্দ (১৮৮৯), ইংল্যান্ডের এন্ড্রু ল্যাং ‘দ্য ব্লু ফেইরি বুক’ নামে একটি পাবলিশ করেন, যাতে বিভিন্ন সংকৃতির রুপকথার গল্প সংগ্রহ ছিল।
 খ্রিষ্টাব্দ (১৮৯০), রাশিয়ার সেন্ট পিটারসবারগে চাইকভস্কি লিখেন ‘দ্য স্লিপিং বিউটি’।
 খ্রিষ্টাব্দ (১৮৯৩), গ্রেট ব্রিটেনে মারিয়ান রোয়ালফ কক্স পাবলিশ করেন ‘সিন্ড্রেলাঃ থ্রি হানড্রেড অ্যান্ড ফোরটি ফাইভ ভ্যারিয়ান্ট অব সিন্ড্রেলা, ক্যাটস স্কিন, অ্যান্ড কযাপ ও’রুশেস’। এটি ছিল প্রথম রুপকথার গল্প বিষয়ক বৃত্তি।
 ১৯১০ সালে ফিনল্যান্ডের অ্যান্টি আরনি ‘দ্য টাইপস অফ দ্য ফোকলর’ পাবলিশ করেন। পরবর্তীতে স্টিথ থমসন ১৯৬১ সালে এটিকে ইংরেজীতে ট্রান্সলেট করেন এবং ব্যাখ্যা করেন।
 ১৯৩৭ সালে আমেরিকাতে ওয়াল্ট ডিজনি প্রথম অ্যানিমেটেড মুভি মুক্তি দেয় রুপকথার গল্পের উপর। প্রথম মুভি ছিল ‘স্নো ওয়াইট অ্যান্ড সেভেন ডোয়ারফ’।

স্নো-হুয়াইট-সাত-বামনের-রুপকথার-গল্প-Snow-White-and-the-Seven-Dwarfs
স্নো হুয়াইট এবং সাত বামনের রুপকথার গল্প (Image: Google বাবা )

রুপকথার গল্পগুলো অনেক ভাবেই আমাদের আবেগের সাথে জড়িয়ে আছে। বড় বেলাতে এসেও সেই আবেগ থেকে বের হয়ে আসতে পারিনা আমরা। রুপকথার সুখী সমাপ্তির সাথে করুণ ইতিহাসের ছোঁয়া হয়তো আমরা পাইনি। তবুও এই রুপকথার গল্প গুলোই আমাদের শৈশবের সাথী ছিল, ভয় জাগানিয়া পরম এক মোহ ছিল। ভয়ে ভয়ে মুখ লুখিয়েই শুনতাম সেই সব অলীক কল্পিত গল্পগুলো। হাজার হাজার বছরের পথযাট্রে রুপকথার চরিত্রগুলো আজো উজ্জ্বল এবং অমলিন।

এই আরটিকেলটি লিখার সময় সাহায্য নেয়া হয়েছে, উইকিপিডিয়া, বিবিসি নিউজ, kateforsyth ব্লগ সহ বিভিন্ন ইংরেজি ব্লগ থেকে।

মোঃ ওয়ালীউল্লাহ অলি

http://enlightentricks.com

সমসাময়িক একজন মানুষ। রক্তে মিশে থাকা লেখালেখি থেকেই ব্লগিং এর অনুপ্রেরণা। লিখতে ভালোবাসি। প্রচুর লিখতে হবে, বাঁচতে হলে লিখতে হবে। এই ব্রত মাথায় নিয়েই লিখে চলেছি। বাংলার পাশাপাশি ইংলিশেও ব্লগিং করছি Enlighten Tricks ওয়েবসাইটে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *