কাজী নজরুল ইসলামের উক্তি ও হৃদয়গ্রাহী অমর বাণী সমূহ
বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম চুরুলিয়া, আসানসোল, পশ্চিমবঙ্গের একটি দরিদ্র মুসলিম পরিবারে ২৪ মে ১৮৯৯(বাংলা – ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬) সালে জন্মগ্রহন করেন। বিংশ শতাব্দীর অগ্রণী কবিদের মধ্যে কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন একাধারে কবি, উপন্যাসিক, নাট্যকার, সংগীতজ্ঞ এবং দার্শনিক, যিনি বাংলা কাব্যে প্রগতিশীল নিজস্ব একটি ধারা সৃষ্টি করেছিলেন। দুই বাংলাতেই তিনি সমানভাবে জনপ্রিয় ছিলেন, যা আজো অব্যাহত এবং যুগান্তকারী হিসেবে তাঁর কবিতাগুলো মানুষকে প্রণোদনা দিয়ে যাচ্ছে। মানুষে মানুষে সম্প্রীতি, মানুষের উপর মানুষের অত্যাচার, সামাজিক অনাচার, অবিচার এবং শোষণের বিরুদ্ধে কাজী নজরুল ইসলাম সর্বদা সোচ্চার ছিলেন। তাঁর কলম ব্রিটিশ অত্যাচার বিরুদ্ধে যে বিদ্রোহী রুপ নিয়েছিল তা আজো কালের সাক্ষী হয়ে মানুষের হৃদয়ে সকল অত্যাচারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের সুর তুলে। তিনি তাঁর কবিতা এবং বিভিন্ন যুগান্তকারী বাণীর মাধ্যমে মানুষের অন্তরের অন্তঃস্থলে স্থান করে নিয়েছেন। ধর্ম, সমাজ, মানুষ, প্রেম, ভালবাসা, নারী, বিদ্রোহ, সহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক এবং উপমহাদেশিক বিষয় নিয়ে কাজী নজরুল ইসলামের উক্তি এবং বাণীগুলো নিয়েই এই আয়োজন।
কাজী নজরুল ইসলামের উক্তি ও বাণী সমূহ
কবি এবং মানুষ, এই দুইয়ে মিলেই আমাদের কাজী নজরুল ইসলাম। দুখু মিয়া তাঁর জীবনে সুখের সন্ধান খুব কম পেয়েছেন। যতটুকু পেয়েছেন তা তিনি মানুষের মাঝেই বিলিয়েছেন। তাঁর বাণী আমাদের হৃদয়ে হাজার বছর আলো জ্বালিয়ে রাখবে। কাজী নজরুল ইসলামের উক্তি ও জনপ্রিয় বাণীগুলোকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে সাজানো হয়েছে। এক ক্লিকেই চলে যেতে পারবেন নির্দিষ্ট অংশে।
রচনার ভাগসমূহ
প্রেম ও ভালবাসা নিয়ে কাজী নজরুল ইসলামের উক্তি সমূহ
প্রেম ও ভালবাসা নিয়ে কত শত কবি সাহিত্যিক উক্তি করে গিয়েছেন তার ইয়ত্তা নেই। প্রেম চিরন্তন ও সত্য, ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ ব্যক্তি ও কবি ভেদে আলাদা হলেও সবার কেন্দ্রবিন্দু একই থাকে, তা হচ্ছে মন। মনকে যে বুঝেছেন, মনকে যে ভাব যিনি স্বল্প বাক্যে প্রকাশ করতে পেরেছেন তিনিই কবি। কাজী নজরুল ইসলামকে বিদ্রোহী কবি বলা হলেও, প্রেম ও ভালবাসা নিয়ে কবির কবিতা, বানীতে কোনো খাঁদ ছিল না। তিনি প্রেম ও ভালবাসার অনন্য সাধারণ কবি ছিলেন নজরুল। প্রেম, ভালবাসা নিয়ে কাজী নজরুল ইসলামের উক্তি সমূহের কিছু অংশ উপস্থাপন করা হল।
“যেদিন আমি হারিয়ে যাব, বুঝবে সেদিন বুঝবে,
অস্তপারের সন্ধ্যাতারায় আমার খবর পুছবে
বুঝবে সেদিন বুঝবে!”
উপরোক্ত কাজী নজরুল ইসলামের বাণী, তাঁর রচিত ‘অভিশাপ’ কবিতা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।
“হাসি দিয়ে যদি লুকালে তোমার সারা জীবনের বেদনা
আজো তবে শুধু হেসে যাও, আজ বিদায়ের দিনে কেঁদোনা”
আলোচ্য কাজী নজরুল ইসলামের কবিতাংশটি ‘বিদায় বেলায়’ কবিতা থেকে সংগৃহীত।
“মোর ফুলবনে ছিল যত ফুল
ভরি ডালি দিনূ ঢালি দেবতা মোর ।
হায় নিলে না সে ফুল ছি ছি বেভুল
নিলে তুলি খোপা খুলি কুসুম ডোর”
“ভালোবাসা দিয়ে ভালোবাসা না পেলে তার জীবন দুঃখের ও জরতার।”
“তোমারে যে চাহিয়াছে ভুলে একদিন,
সে জানে তোমারে ভোলা কি কঠিন।”
“ভালবাসার কোন অর্থ বা পরিমাণ নেই ”
“মৃত্যুর যন্ত্রণার চেয়ে বিরহের যন্ত্রণা যে কতো কঠিন,
কতো ভয়ানক তা একমাত্র ভুক্তভুগিই অনুভব করতে পারে”
“মিথ্যা শুনিনি ভাই, এই হৃদয়ের চেয়ে বড় কোনো মন্দীর-কাবা নাই।”
“স্বপন ভেঙে নিশুত্ রাতে জাগবে হঠাৎ চমকে,
কাহার যেন চেনা-ছোঁওয়ায় উঠবে ও-বুকে ছমকে,-
জাগবে হঠাৎ চমকে!
ভাববে বুঝি আমিই এসে
ব’সনু বুকের কোলটি ঘেঁষে,
ধরতে গিয়ে দেখবে যখন
শূন্য শয্যা! মিথ্যা স্বপন!
বেদনাতে চোখ বুঁজবে-
বুঝবে সেদিন বুঝবে! ”
“ তুমি সুন্দর তাই চেয়ে থাকি প্রিয়, সে কি মোর অপরাধ?
চাঁদেরে হেরিয়া কাঁদে চকোরিনী বলে না তো কিছু চাঁদ।”
“ভালোবাসা যে জীবনে অপমান করে সে জীবনে আর ভালোবাসা পায় না।”
“আসবে আবার আশিন-হাওয়া, শিশির-ছেঁচা রাত্রি,
থাকবে সবাই – থাকবে না এই মরণ-পথের যাত্রী!
আসবে শিশির-রাত্রি!
থাকবে পাশে বন্ধু স্বজন,
থাকবে রাতে বাহুর বাঁধন,
বঁধুর বুকের পরশনে
আমার পরশ আনবে মনে-
বিষিয়ে ও-বুক উঠবে-
বুঝবে সেদিন বুঝবে! ”
“আমার যাবার সময় হল দাও বিদায় মোছ আঁখি দুয়ার খোল দাও বিদায়। ”
“এই অসুন্দরের শ্রদ্ধা নিবেদনের
শ্রাদ্ধ দিনে বন্ধু, তুমি যেন যেওনা”
“আমি নিজেই নিজের ব্যথা করি সৃজন
শেষে সেই আমারে কাঁদায়, যারে করি আপনারি জন।”
এই কাজী নজরুল ইসলামের উক্তি, তাঁর রচিত ‘লক্ষ্মীছাড়া’ কবিতা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।
“আবার গাঙে আসবে জোয়ার, দুলবে তরী রঙ্গে,
সেই তরীতে হয়ত কেহ থাকবে তোমার সঙ্গে-
দুলবে তরী রঙ্গে,
প’ড়বে মনে সে কোন্ রাতে
এক তরীতে ছিলেম সাথে,
এমনি গাঙ ছিল জোয়ার,
নদীর দু’ধার এমনি আঁধার
তেমনি তরী ছুটবে-
বুঝবে সেদিন বুঝবে!”
“গগনে কৃষ্ণ মেঘ দোলে – কিশোর কৃষ্ণ দোলে বৃন্দাবনে
থির সৌদামিনী রাধিকা দোলে নবীন ঘনশ্যাম সনে;
দোলে রাধা শ্যাম ঝুলন-দোলায় দোলে আজি শাওনে ”
“ ছবি আমার বুকে বেধে
পাগল হয়ে কেঁদে কেঁদে
ফিরবে মরু কানন গিরি
সাগর আকাশ বাতাশ চিরি
সেদিন আমায় খুজবে
বুঝবে সেদিন বুঝবে।”
“গাইতে গিয়ে কন্ঠ ছিড়ে আসবে যখন কান্না
বলবে সবাই- সেই যে পথিক তার শোনানো গান না?-
আসবে ভেঙ্গে কান্না,
পড়বে মন আমার সোহাগ
কন্ঠে তোমার কাদবে বেহাগ
পড়বে মনে আমার ফাকি
অশ্রুহারা কঠিন আখি
ঘন ঘন মুছবে,
বুঝবে সেদিন বুঝবে। ”
“মিথ্যা শুনিনি ভাই
এই হৃদয়ের চেয়ে বড় কোনও মন্দির-কাবা নাই ”
“আমার বুকের যে কাটা ঘা, তোমায় ব্যাথা হানত সেই আঘাতই যাচবে আবার হয়তো হয়ে শ্রান্ত আসব তখন পান্থ, হয়তো তখন আমার কোলে সোহাগ লোভে পড়বে ঢোলে আপনি সেদিন সেধে-কেদে চাপবে বুকে বাহুয় বেধে চরন চুমে পূজবে বুঝবে সেদিন বুঝবে।”
“আসবে ঝড়ি, নাচবে তুফান টুটবে সকল বন্ধন কাপবে কুটির সেদিন ত্রাসে, জাগবে বুকেক্রন্দন টুটবে যবে বন্ধন, পড়বে মনে নেই সে সাথে বাধতে বুকে দুঃখ রাতে- আপনি গালে যাচবে চুমা চাইবে আদর মাগবে ছোওয়া আপনি যেচে চুমবে বুঝবে সেদিন বুঝবে।”
“সে দেশে যবে বাদল ঝরে কাঁদে না কি প্রাণ একেলা ঘরে, বিরহ ব্যথা নাহি কি সেথা বাজে না বাঁশি নদীর তীরে।”
“তোমার সখার আসবে যেদিন এমনি কারা বন্ধ আমার মত কেদে কেদে হয়তো হবে অন্ধ সখার কারা বন্ধ, বন্ধু তোমার হানবে হেলা ভাঙ্গবে তোমার সুখের খেলা দীর্ঘ লো কাটবে না আর বইতে প্রাণ শ্রান্ত এ ভার সরন মনে যুঝবে বুঝবে সেদিন বুঝবে।”
“কামনা আর প্রেম দুটি হচ্ছে সম্পুর্ণ আলাদা। কামনা একটা প্রবল সাময়িক উত্তেজনা মাত্র আর প্রেম হচ্ছে ধীর প্রশান্ত ও চিরন্তন।”
অল্প সময়ের সাহিত্য জীবনে কাজী নজরুল ইসলাম মানুষের প্রতি মানুষের ভালবাসা, প্রেমিক হৃদয়ের ভালবাসা এবং তাঁর জীবনে আসা সীমাহীন ভালবাসা ও প্রেম নিয়ে অসংখ্য বাণী দিয়ে গিয়েছেন। বাদ পড়া প্রেম ও ভালবাসা নিয়ে কাজী নজরুল ইসলামের উক্তি সমূহ একে এক যুক্ত করে দেয়া হবে।
প্রেম, ভালোবাসা নিয়ে অন্যান্য গুণীদের উক্তি জেনে নিন।
ভালবাসা ও প্রেম নিয়ে জালাল উদ্দিন রুমির উক্তি সমূহ। বদলে যাবে প্রেম দর্শন
প্রেম ও ভালোবাসা নিয়ে জীবনানন্দ দাশের উক্তি | আলোচিত বাণী সমাবেশ
মানুষ নিয়ে কাজী নজরুল ইসলামের উক্তি
মানুষের জয়গান গাওয়া কবি কাজী নজরুল ইসলাম সর্বদাই মানুষ এবং মানুষের অধিকার নিয়ে সংগ্রাম করেছেন। এর জন্য কবিকে জেলও কাটতে হয়েছে, স্বীকার হতে হয়েছে অসহ্য যন্ত্রনার। জেলের শিকলে বন্দী অবস্থায়ও লিখে গিয়েছেন কবিতা, গান। জেলে বন্দী অবস্থায় তাঁর লেখা কারার ঐ লৌহ কপাট আজও নিপীড়িত মানুষের মুক্তির সংগ্রামের কথা বলে। সমাজ, মানবিক, মূল্যবোধ এবং মানুষ নিয়ে কাজী নজরুল ইসলামের উক্তি সমূহ স্বল্পাকারে উপস্থাপন করা হল।
“অভাবের দিনে প্রিয় অতিথি আসার মত পীড়াদায়ক বুঝি আর কিছু নেই! শুধু হৃদয় দিয়ে দেবতার পূজা হয়তো করা যায়, কিন্তু শুধু-হাতে অতিথিকে বরণ করা চলে না।”
কাজী নজরুল ইসলামের জনপ্রিয় উক্তিটি তাঁর “মৃত্যুক্ষুধা” উপন্যাস থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।
“সত্য যদি লক্ষ্য হয়, সুন্দর ও মঙ্গলের সৃষ্টি সাধনা ব্রত হয়, তবে তাহার লেখা সম্মান লাভ করিবেই করিবে।”
“বাহিরের স্বাধীনতা গিয়াছে বলিয়া অন্তরের স্বাধীনতাকেও আমরা যেন বিসর্জন না দিই।”
আলোচ্য কাজী নজরুল ইসলামের উক্তিটি ‘যুগবাণী’ গ্রন্থের ‘গেছে দেশ দুঃখ নাই, আবার তোরা মানুষ হ!’ প্রবন্ধ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।
“হেথা সবে সম পাপী, আপন পাপের বাটখারা দিয়ে অন্যের পাপ মাপি!”
“যুগের ধর্ম এই- পীড়ন করিলে সে পীড়ন এসে পীড়া দেবে তোমাকেই!”
সঞ্চিতা কাব্যগ্রন্থের পাপ কবিতা থেকে কাজী নজরুল ইসলামের বাণীটি সংগ্রহ করা হয়েছে।
রাখাল বলিয়া কারে করো হেলা, ও-হেলা কাহারে বাজে!
হয়তো গোপনে ব্রজের গোপাল এসেছে রাখাল সাজে !
উক্ত কাজী নজরুল ইসলামের বাণী, জনপ্রিয় “মানুষ” কবিতা থেকে এই উক্তি চয়ণ করা হয়েছে।
“পশুর মতো সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে আমাদের লাভ কী, যদি আমাদের গৌরব করার মতো কিছু না-ই থাকে”
“অসতী মাতার পুত্র সে যদি জারজ-পুত্র হয়,
অসৎ পিতার সন্তানও তবে জারজ সুনিশ্চয় !”
সঞ্চিতা কাব্যগ্রন্থের ‘বারাঙ্গনা’ কাব্য থেকে এই কাজী নজরুল ইসলামের বাণী চয়ণ করা হয়েছে।
“ও কারা কোরাণ বেদ বাইবেল চুম্বিছে মরি মরি
ও মুখ হইতে কেতাব গ্রন্থ নাও জোর করে কেড়ে
যাহারা আনিল গ্রন্থ-কেতাব সেই মানুষেরে মেরে
পুজিছে গ্রন্থ ভন্ডের দল! – মুর্খরা সব শোন
মানুষ এনেছে গ্রন্থ; গ্রন্থ আনেনি মানুষ কোনও। ”
“ আপন পাপের বাটখারা দিয়ে অন্যের পাপ মাপি
জবাবদিহির কেন এত ঘটা যদি দেবতাই হও
টুপি পড়ে টিকি রেখে সদা বলো যেন তুমি পাপী নও
পাপী নও যদি কেন এ ভড়ং ট্রেডমার্কার ধুম
পুলিশি পোশাক পরিয়া হয়েছ পাপের আসামী গুম। ”
“অন্ধের মতো কিছু না বুঝিয়া, না শুনিয়া, ভেড়ার মতো পেছন ধরিয়া চলিও না । নিজের বুদ্ধি, নিজের কার্যশক্তিকে জাগাইয়া তোলে ।”
“বহু যুবককে দেখিয়াছি যাহাদের যৌবনের উর্দির নিচে বার্ধকের কঙ্গাল মূর্তি।”
“আমি এই দেশে, এই সমাজে জন্মেছি বলেই শুধু এই দেশের, এই সমাজেরই নই, আমি সকল দেশের সকল মানুষের।”
“আমায় অভিনন্দিত আপনারা সেই দিনই করেছেন যেদিন আমার লেখা আপনাদের ভালো লেগেছে।”
“বসন্ত এলো এলো এলো রে
পঞ্চম স্বরে কোকিল কুহরে
মুহু মুহু কুহু কুহু তানে। ”
“আসে বসন্ত ফুল বনে সাজে বনভূমি সুন্দরী;
চরণে পায়েলা রুমুঝুমু মধুপ উঠিছে গুঞ্জরি ”
“ বসন্ত মুখর আজিদক্ষিণ সমীরণে মর্মর গুঞ্জনেবনে বনে বিহ্বল বাণী ওঠে বাজি”
“সত্য যদি হয় ধ্রুব তোর
কর্মে যদি না রয় ছল,ধর্ম দুগ্ধে না রয় জল
সত্যের জয় হবেই হবে আজ নয় কাল মিলবেই ফল।”
বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের উক্তিটি ‘সত্যমন্ত্র’ কবিতা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।
“চাঁদ হেরিছে চাঁদমুখ তার সরসীর আরশিতে
ছোটে তরঙ্গ বাসনা ভঙ্গ সে অঙ্গ পরশিতে। ”
“ফোটে যে ফুল আঁধার রাতে ঝরে ধুলায় ভোর বেলাতে আমায় তারা ডাকে সাথী আয়রে আয় সজল করুণ নয়ন তোলো দাও বিদায়। ”
“সত্য যদি লক্ষ্য হয়, সুন্দর ও মঙ্গলের সৃষ্টি সাধনা ব্রত হয়, তবে তাহার লেখা সম্মান লাভ করিবেই করিবে।”
“বাহিরের
স্বাধীনতা গিয়াছে বলিয়া অন্তরের
স্বাধীনতাকেও আমরা যেন বিসর্জন
না দিই।”
“তোমাদের পানে চাহিয়া বন্ধু আর
আমি জাগিব না কোলাহল
করি সারা দিনমান কারো ধ্যান ভাঙিব
না।”
“আর কেউ হবেনা আপন যখন সব হারিয়ে চলতে হবে।
পথটি আমার নির্জন,আমি নিজেই নিজের ব্যথা করি সৃজন।
‘লক্ষ্মীছাড়া’ নজরুল রচনাবলী থেকে নজরুল বাণীটি সংগ্রহ করা হয়েছে।
“রক্ত ঝরাতে পারি না তো একা, তাই
লিখে যাই এ রক্ত লেখা।”
‘‘আজি হ’তে শত বর্ষে আগে, কে কবি,
স্মরণ তুমি করেছিলে আমাদের শত
অনুরাগে’
“নুড়ি হাজার বছর ঝরণায় ডুবে থেকেও রস পায় না।”
“আর্থ দিয়ে মাড়োয়ারিকে, জমিদার, মহাজনকে বা ভিখারিকে হয়তো খুশি করা যায়, কিন্তু কবিকে খুশি করা যায় না ।”
“সত্যকে অস্বীকার করিয়া ভশ্তামি দিয়া কখনো মঙ্গল উৎসবের কল্যাণ প্রদীপ জ্বলিবে না।”
“গাহি সাম্যের গান –
মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই , নহে মহীয়ান।” –
আলোচ্য কাজী নজরুল ইসলামের বাণী, তাঁর ‘মানুষ’ কবিতা থেকে সংগ্রহীত।
“যার ভিত্তি পচে গেছে, তাকে একদম উপড়ে ফেলে নতুন করে ভিত্তি না গাঁথলে তার ওপর ইমারত যতবার খাঁড়া করা যাবে, ততবার তা পড়ে যাবে ।”
“শোন মর্ত্যের জীব অন্যের যত করিবে পীড়ন নিজে হবে তত ক্লীব।”
“তিনিই আর্টিস্ট, যিনি আর্ট ফুটাইয়া তুলিতে পারেন । আর্টের অর্থ সত্য প্রকাশ এবং সত্য মানেই সুন্দর; সত্য চিরমঙ্গলময়।”
“অসুন্দর পৃথিবীকে সুন্দর করতে; সর্বনির্যাতন থেকে মুক্ত করতেই মানুষের জন্ম।”
“ব্যর্থ না হওয়ার সব চাইতে নিশ্চিন্ত পথ হলো সাফল্য অর্জনে দৃঢ় সঙ্কল্প হওয়া।”
“দেখিয়া শুনিয়া ক্ষেপিয়া গিয়াছি তাই যাহা আসে কই মুখে” —
হৃদয়গ্রাহী এই কাজী নজরুল ইসলামের উক্তি, তাঁর ‘আমার কৈফিয়ত’ কবিতা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।
“অনেক সময় খুব বেশি বিনয় দেখাতে গিয়ে নিজের সত্যেকে অস্বীকার করে ফেলা হয় । তাতে মানুষকে ক্রমেই ছোট করে ফেলে, মাথা নিচু করে আনে ও রকম মেয়েলি বিনয়ের চেয়ে অহংকারের পৌরুষ অনেক ভালো।”
মনুষ্যত্ব, সমাজ, সামাজিক অবস্থান এবং মানুষ নিয়ে কাজী নজরুল ইসলাম অসংখ্য বাণী দিয়ে গিয়েছেন। যার সামান্যই এখানে উপস্থিত করা হয়েছে। মানুষ ও মনুষ্যত্ব সম্পর্কিত কাজী নজরুল ইসলামের উক্তি গুলোকে ক্রমে যুক্ত করা হবে, যথাসাধ্য চেষ্টার মাধ্যমে।
মানুষ, সমাজ ও মনুষ্যত্ব নিয়ে অন্যান্য মনীষীদের উক্তি ও বাণী পড়ে নিতে পারেন।
সমাজ এবং জীবন দর্শন নিয়ে রুমির উক্তি সমূহ । বদলে যাবে জীবন আদর্শ
মহাত্মা গান্ধীর উক্তি । জনপ্রিয় বাণী ও উপদেশ সমূহ । আত্মপ্রকাশ
ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং ধর্ম নিয়ে কাজী নজরুল ইসলামের উক্তি
ধর্ম এবং ধর্মীয় মূল্যবোধ নিয়ে কবি সবসময় সোচ্চার ছিলেন, যত দিন তিনি লিখতে পেরেছেন। ধর্মের নামে গোঁড়ামি, ভণ্ডামি এবং ভণিতার বিরুদ্ধে গেয়েছেন গান, লিখেছেন অসংখ্য কবিতা, দিয়ে গিয়েছেন কালজয়ী কিছু বাণী। ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং ধর্ম নিয়ে কাজী নজরুল ইসলামের উক্তি গুলো ছোট পরিসরে উপস্থাপন করা হল।
“দূর আজানের মধুর ধ্বনি, বাজে, বাজে মসজিদের-ই মিনারে।
মনেতে জাগে, হাজার বছর আগে, হজরত বেলালের অনুরাগে।
তার খাস এলাহান, মাতাইতো প্রাণ।
ভাঙ্গাইতো পাষান, জাগাইতো মহিমারে।
দূর আজানের মধুর ধ্বনি, বাজে, বাজে মসজিদের-ই মিনারে”
“আজ বুঝি-কেন বলিয়াছিলেন শেষ পয়গম্বর- ‘মোর পরে যদি নবী হত কেউ, হত সে এক উমর!”
“মওলানা মৌলবি সাহেবকে সওয়া যায়, মোল্লাও চক্ষুকর্ণ বুজিয়া সহিতে পারি, কিন্তু কাঠমোল্লার অত্যাচার অসহ্য হইয়া উঠিয়াছে। ইসলামের কল্যাণের নামে ইহারা যে কওমের জাতির ধর্মের কি অনিষ্ট করিতেছেন তাহা বুঝিবার মত জ্ঞান নাই বলিয়াই ইহাদের ক্ষমা করা যায় না। ইহারা প্রায় প্রত্যেকেই ‘মনে মনে শাহ ফরীদ, বগল মে ইট’। ইহাদের নীতি ‘মুর্দা দোজখ মে যায় আওর বেহেশত মে যায়, মেরা হালুয়া রুটি সে কাম’। ”
“ মসজিদেরই পাশে আমার কবর দিও ভাই
যেন গোরে থেকেও মোয়াজ্জিনের আজান শুনতে পাই। ”
“পুঁথির বিধান যাক পুড়ে তোর
বিধির বিধান সত্য হোক।”
কাজী নজরুল ইসলামের এই উক্তিটি ‘সত্যমন্ত্র’ কবিতা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।
“খেলিছ এ বিশ্ব লয়ে
বিরাট শিশু আনমনে।
প্রলয় সৃষ্টি তব পুতুল খেলা
নিরজনে প্রভু নিরজনে।। ”
“মৌ-লোভী যত মৌলবি আর মোল-লা’রা কন হাত নেড়ে
দেব-দেবী নাম মুখে আনে সবে দাও পাজিটার জাত মেরে
ফতোয়া দিলাম কাফের কাজী ও
যদিও শহীদ হইতে রাজি ও
আমপারা পড়া হামবড়া মোরা এখনও বেড়াই ভাত মেরে
হিন্দুরা ভাবে পার্শী শব্দে কবিতা লেখে ও পা’ত নেড়ে।”
“ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ
তুই আপনাকে আজ বিলিয়ে দে, শোন আসমানী তাগিদ।
তোর সোনা-দানা, বালাখানা সব রাহে লিল্লাহ
দে যাকাত, মুর্দা মুসলিমের আজ ভাঙাইতে নিঁদ
ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ। ”
শুণ্যে মহা আকাশে তুমি মগ্ন লীলা বিলাসে
ভাঙ্গিছো গড়িছো নীতি ক্ষণে ক্ষণে
নির্জনে প্রভু নির্জনে খেলিছো।”
“নামাজ পড়, রোজা রাখ, কলমা পড় ভাই,তোর আখেরের কাজ করে নে সময় যে আর নাই।”
“জানিস নাকি ধর্ম সে যে বর্মসম সহনশীল
তাই কি ভাই ভাঙতে পারে ছোঁওয়া ছুঁয়ির ছোট্ট ঢিল ?
যে জাত-ধর্ম ঠুনকো এত আজ না হয় কাল ভাঙবে সে ত।
যাক না সে জাত জাহান্নামে রইবে মানুষ নাই পরোয়া।”
‘জাতের বজ্জাতি’ শীর্ষক কবিতা থেকে এই কাজী নজরুল ইসলামের বাণীটি সংগ্রহ করা হয়েছে।
“খোদার কি আশ্চর্য মহিমা । রাজা–যার অত ধন মালামাত্তা, অত প্রতাপ, সেও মরে মাটি হয় । আর যে ভিখারি খেতে না পেয়ে তালপাতার কুঁড়েতে কুঁকড়ে মরে পড়ে থাকে, সেও মাটি হয়।”
“নামাজ পড়, রোজা রাখ, কলমা পড় ভাই, তোর আখেরের কাজ করে নে সময় যে আর নাই।”
“বিশ্ব যখন এগিয়ে চলেছে, আমরা তখনও বসে- বিবি তালাকের ফতোয়া খুঁজেছি, ফিকাহ ও হাদিস চষে”
“কাণ্ডারী এ তরীর পাকা মাঝি মাল্লা
দাঁড়ি মুখে সারিগান- লা শরীক আল্লাহ।”
আলোচ্য কাজী নজরুল ইসলামের উক্তি, তাঁর ‘খেয়াপারের তরণী’ শীর্ষক কবিতা থেকে সংগ্রহীত উক্তি।
“ হিন্দু না ওরা মুসলিম এই জিজ্ঞাসে কোন জন হে, কাণ্ডারি বল ডুবিছে মানুষ সন্তান মোর মা’র ”
ধর্ম নিয়ে অন্যান্য মনীষীদের উক্তি জেনে নিতে পারেন।
সৃষ্টিকর্তা, অতীন্দ্রিয়বাদ এবং সুফিবাদ নিয়ে রুমির উক্তি সমূহ । হৃদয়গ্রাহী বানী
মাওলানা তারিক জামিলের উক্তি ও উপদেশ । জীবন সম্পর্কিত অমূল্য জ্ঞান সম্ভার
কাজী নজরুল ইসলামের বিদ্রোহী উক্তি
কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর বিদ্রোহী কবিতার মাধ্যমেই সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। বিদ্রোহ তাঁর রক্তে মিশে ছিল, যার দরুন তাঁকে সইতে হয়েছে অবর্ণনীয় যন্ত্রনা, অত্যাচার। ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে তিনি কলমকেই অস্ত্র বানিয়ে বিদ্রোহ করে গিয়েছেন তাঁর বিদ্রোহী কবিতার মাধ্যমে। বিদ্রোহ নিয়ে কাজী নজরুল ইসলামের উক্তি ও বাণীগুলোর কিছু অংশ উপস্থাপন করা হল।
“আমি বিদ্রোহী ভৃগু, ভগবান বুকে এঁকে দিই পদ-চিহ্ন।”
“বল বীর-বল উন্নত মম শির! শির নেহারী’ আমারি নতশির ওই শিখর হিমাদ্রীর”
“আমি বেদুইন, আমি চেঙ্গিস, আমি আপনারে ছাড়া করি না কাহারে কূর্ণিশ।”
বিদ্রোহী কবির বিদ্রোহী এই বানীটি ‘সঞ্চিতা’ কাব্য গ্রন্থ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।
“মহা – বিদ্রোহী রণক্লান্ত
আমি সেই দিন হব শান্ত।
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন-রোল আকাশে-বাতাসে ধ্বনিবে না,
অত্যাচারীর খড়ুগ কৃপাণ ভীম রণ, ভূমে রণিবে না-
বিদ্রোহী রণক্লান্ত
আমি সেই দিন হব শান্ত।”
“ফাঁসির মঞ্চে গেয়ে গেল যারা জীবনের জয়গান
আসি’ অলক্ষ্যে দাঁড়ায়েছে তারা, দিবে কোন বলিদান?”
উক্ত কাজী নজরুল ইসলামের বিদ্রোহী উক্তি, তাঁর ‘কাণ্ডারী হুশিয়ার’ কবিতা থেকে সংগ্রহীত উক্তি।
“ আমি বন্ধনহারা কুমারীর বেনী, তন্বী নয়নে বহ্নি, আমি ষোড়শীর হৃদি-সরসিজ প্রেম উদ্দাম, আমি ধন্যি।”
“কারার ঐ লৌহকপাট, ভেঙ্গে ফেল কর রে লোপাট, রক্ত-জমাট শিকল পূজার পাষাণ-বেদী।”
নারী নিয়ে কাজী নজরুল ইসলামের হৃদয়গ্রাহী বাণী
প্রেম ও ভালোবাসার সাথে নারীর রয়েছে অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক। প্রেম ও ভালবাসার কবি নারী নিয়ে লিখবেন না তা হয় না। নারী এবং নারীদের সম্মান নিয়ে কবি কাজী নজরুল ইসলাম বেশ কিছু কবিতা লিখেছেন, দিয়ে গিয়েছেন অসংখ্য যুগান্তকারী বাণী। নারীদের নিয়ে লিখার কারনে তখনকার সমাজের অনেক নামী দামী কবি সাহিত্যিক তাঁকে নারী ঘেঁষা কবি বলেও উল্লেখ করেছেন। কবি তাও সানন্দে গ্রহণ করেছেন। নারীদের নিয়ে কাজী নজরুল ইসলামের উক্তি সমূহের কিছু অংশ নিচে উপস্থাপন করা হল।
“বিশ্বে যা-কিছু মহান সৃষ্টি চির-কল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।
বিশ্বে যা-কিছু এল পাপ-তাপ বেদনা অশ্রুবারি
অর্ধেক তার আনিয়াছে নর, অর্ধেক তার নারী।
কাজী নজরুল ইসলামের ‘নারী’ কবিতা থেকে উক্তিটি সংগ্রহ করা হয়েছে।
“নারীর বিরহে নারীর মিলনে নর পেলো কবি প্রাণ
যত কথা তার হইল কবিতা শব্দ হইল গান।”
“কোনকালে একা হয়নিকো জয়ী, পূরুষের তরবারী; প্রেরনা দিয়েছে, শক্তি দিয়াছে, বিজয়ালক্ষী নারী।”
“কান্না হাসির খেলার মোহে অনেক আমার কাটল বেলা
কখন তুমি ডাক দেবে মা, কখন আমি ভাঙব খেলা ?”
কাজী নজরুল ইসলামের উক্তি ‘উপেক্ষিত’ কবিতা থেকে এই উক্তিটি সংগ্রহ করা হয়েছে।
“খেলে চঞ্চলা বরষা-বালিকা
মেঘের এলোকেশে ওড়ে পুবালি বায়
দোলে গলায় বলাকার মালিকা।। ”
“গিন্নির চেয়ে শালী ভালো ”
“কেয়া পাতার তরী ভাসায় কমল -ঝিলে
তরু-লতার শাখা সাজায় হরিৎ নীলে।
ছিটিয়ে মেঠো জল খেলে সে অবিরল
কাজলা দীঘির জলে ঢেউ তোলে
আনমনে ভাসায় পদ্ম-পাতার থালিকা।”
“বেদনার যুগ, মানুষের যুগ, সাম্যের যুগ আজি, কেহ রহিবে না বন্দী কাহারও, উঠিছে ডঙ্কা বাজি।”
“আপনারে আজ প্রকাশের তব নাই সেই ব্যাকুলতা
আজ তুমি ভীরু আড়ালে থাকিয়া নেপথ্যে কও কথা!
চোখে চোখে আজ চাহিতে পার না; হাতে রুলি, পায়ে মল,
মাথায় ঘোমটা, ছিঁড়ে ফেল নারী, ভেঙে ফেল ও শিকল!
যে-ঘোমটা তোমায় করিয়াছে ভীরু ওড়াও সে আবরণ!
দূর করে দাও দাসীর চিহ্ন ঐ যতো আবরণ।”
“নর-ভাবে আমি বড় নারী ঘেঁষা! নারী ভাবে, নারী বিদ্বেষী!’
নারী নিয়ে কাজী নজরুল উক্তিটি “আমার কৈফিয়ত; সর্বহারা” কাব্য থেকে সংগ্রহীত।
“শিরী লায়লীর খোঁজে ফরহাদ খোঁজে কায়েস …
খুঁজে ফেরে হেথা যুবা সেলিম নূরজাহানের দূর সাকিম
চাঁদ বাজারে এই নওরোজের
দোকান বসেছে মোমতাজের,
সওদা করিতে এসেছে ফের
শাহজাহান হেথা রূপ পাগল!”
“হে মোর রাণী! তোমার কাছে হার মানি আজ শেষে।
আমার বিজয়-কেতন লুটায় তোমার চরণ-তলে এসে।
আজ বিদ্রোহীর এই রক্ত-রথের চূড়ে,
বিজয়িনী! নীলাম্বরীর আঁচল তোমার উড়ে।”
“আমার বাণী জয়মাল্য, রাণী! তোমার সবি।
তুমি আমায় ভালোবাসো, তাইতো আমি কবি।
আমার এ রূপ,— সে যে তোমার ভালোবাসার ছবি।”
কাজী নজরুল ইসলামের (কবি-রাণী, দোলন-চাঁপা) কাব্য থেকে সংগ্রহীত বাণী।
“প্রিয় রূপ ধরে এতদিনে এলে আমার কবিতা তুমি, আঁখির পলকে মরুভূমি যেনো হয়ে গেলো বনভূমি।”
“বেলা গেলো বধূ’ ভাসে ননদী, চলে জল নিতে যাবি লো যদি।”
“সর্বসহা কন্যা মোর! সর্বহারা মাতা!
শূন্য নাহি রহে কভূ মাতা ও বিধাতা!’ (মা, সর্বহারা)
“তোমার মমতা-মানিক আলোকে চিনিনু …
মাতা তুমি লাঞ্ছিতা বিশ্ব-জননী।
তোমার আঁচল পাতা নিখিল দুঃখী-নিপীড়িত তবে,
বিষ শুধু তোমা দহে যথা তব মাগো পীড়িত নিখিল ধরণীর ভার বহে।’
“ভগবান! তুমি চাহিতে পার কি ঐ দুটি নারীর পানে?
জানি না, তোমায় বাঁচাবে কে যদি ওরা অভিশাপ হানে!”
নারী নিয়ে অন্যান্য মনীষীদের উক্তি জেনে নিন।
তসলিমা নাসরিনের কবিতা সমূহ । আলোচিত এবং বিতর্কিত
বিরহের কবি হেলাল হাফিজের উক্তি । হৃদয়ছোঁয়া বাণী সমাবেশ
কালজয়ী কবি কাজী নজরুল ইসলাম মধ্য বয়সে পিক্স ডিজিজে আক্রান্ত হয়ে আমৃত্যু সাহিত্যকর্ম থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন এবং মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। ১৯৭২ সালে সপরিবারে তিনি ঢাকা, বাংলাদেশে চলে আসেন এবং বাংলাদেশের জাতীয়তা গ্রহণ করেন। তিনি রোগাক্রান্ত অবস্থায় ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট(বাংলা- ১২ ভাদ্র ১৩৮৩) সালে মৃত্যুবরণ করেন। বাংলা সাহিত্যের এই উজ্জল নক্ষত্র কখনো নিভে যাবে না, কবি নজরুল ইসলামের উক্তি, কবিতা এবং তাঁর অন্যান্য সাহিত্য কর্মের মাঝেই তিনি বেঁচে থাকবেন প্রতিটি শান্তিকামী বিদ্রোহী হৃদয়ের মাঝে ।
এই আরটিকেলটি লিখার সময় সাহায্য নেয়া হয়েছে উইকিপিডিয়া, বিভিন্ন বাংলা ব্লগ এবং কাজী নজরুল ইসলামের সাহিত্য কর্ম থেকে।
6 Comments
[…] […]
[…] আরো পড়ে নিতে পাড়েন, মানুষ ও মনুষ্যত্ব নিয়ে >> কাজী নজরুল ইসলামের উক্তি […]
[…] নিয়ে কাজী নজরুল ইসলামের উক্তিসমূহ […]
[…] কাজী নজরুল ইসলামের প্রেম বাণী […]
[…] কাজী নজরুল ইসলামের জীবন দর্শন […]
[…] […]