চাঁদের অমাবস্যা বুক রিভিউ । সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ । একটি মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস
স্তম্ভপ্রতিম কথাশিল্পী সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ ১৯২২ সালের ১৫ আগস্ট জন্মগ্রহণ করে ১৯৭১ সালের ১০ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন। ১৯৬৪ সালে নওরোজ কিতাবিস্তান থেকে প্রথম প্রকাশিত হয় চাঁদের অমাবস্যা উপন্যাসটি। ফ্রান্সে থাকাকালীন সময়ে তিনি বইটি লিখেন এবং এর প্রচ্ছদ তিনি নিজেই করেছিলেন।
উপন্যাসঃ চাঁদের অমাবস্যা
লেখকঃ সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ
প্রকাশকালঃ প্রথম প্রকাশ ১৯৬৪
প্রকাশকঃ নওরোজ কিতাবিস্তান
চাঁদপাড়া গ্রামের বাইশ-তেইশ বছরের যুবক শিক্ষক, আরেফ আলী নামহীন একটা গ্রামের স্কুলে চাকরী করেন। স্বজন বলতে তার মা। দুইবেলা বাচ্চাদের পড়ানোর বিনিময়ে সে একি গ্রামের বড় বাড়িতে লজিং মাস্টার হিসেবে থাকে। দাদা সাহেব বড় বাড়ির প্রধান। কাদের দাদা সাহেবের ছোট ভাই বংশের ছোটও বলা যায়, দাদা সাহেবের সাথে তাঁর বয়সের দুরুত্ব তিরিশ বছর। ছোট বেলা থেকে সে অনেক টা উৎশৃঙ্খল, পড়াশোনায় সে একদমই মনোযোগী ছিল না। পরবর্তীতে সে হঠাৎ করেই শান্ত হয়ে যায়, এতটাই নিরব যে সংসারে কারো সাথে সে কথা বা যোগাযোগ রাখে না, এক কথায় সে সংসার থেকে বিচ্ছিন্ন।বিয়ে করলেও বউ এর সাথেও তার ততটা আপন সম্পর্ক নয়। একাকিত্বের সাথেই তার বসবাস।
উপন্যাসটি দ্বি-প্রধান চরিত্র দ্বারা কেন্দ্রীভুত হয়েছে। যুবক শিক্ষক আরেফ আলী ও বড় বাড়ির ছোট ছেলে কাদের। তবে যুবক শিক্ষক আরেফ আলীই প্রধান চরিত্র আর তার ভাবনা গুলো কাদের কে ঘিরে গঠিত। এই দুই চরিত্রের মধ্যে না বন্ধুন্ত না শত্রুতা, তবে একটা সময়ে একটু বিরুদ্ধ ভাব লক্ষ্য করা যায়।
উপন্যাসের শুরু এভাবে যে, যুবক শিক্ষক ও কাদেরের সাক্ষাৎ হয় বাঁশঝাড়ে। সাক্ষাৎটা আকস্মিক, যদিও যুবক শিক্ষকের গভীর রাতে প্রকৃতি বিচরন করার কারনটা কাদেরকে অনুসরন করা। দাদা সাহেব এমন কি গ্রামের সবাই কাদের কে দরবেশ ভাবে, কিন্তু যুবক শিক্ষকের বিশ্বাসটা একটু কম।কাদেরের নিশি বিচরন তার কাছে সন্দেহের। তাই কাদের কে অনুসরন করতে যেয়েই সে জোৎস্না বিস্তৃত রাতে নিজেকে হারিয়ে ফেলে, একই সাথে কাদেরকেও হারিয়ে ফেলে কিন্তু তারই সাথে একটা অপ্রস্তুত পরিবেশের সাথে তার সাথে সাক্ষাৎ হয়। আর এই অপ্রস্তুত ঘটনাটাই পুরো উপন্যাসটির আলোচনার মুল কেন্দ্র। এই ঘটনাটাই তাকে ভাবিয়ে তোলে। উলট পালট করে দেয় তার দৈনন্দিন জীবন, বিবেক আর মনুষ্যত্বের কড়া বাকবিতন্ডায় পড়তে হয় তাকে। অবশেষে মনুষ্যত্বের জয় টাই বোধ করি মুখ্য হয়ে দাড়ায়। কিন্তু সমাজের দৃষ্টিকোন থেকে সে পরাজিত।
জোৎস্না বিস্তৃত শীতের রাতে যুবক শিক্ষক বাঁশঝাড়ে একটা যুবতি নারীর অর্ধউলঙ্গ মৃতদেহ দেখে। তারপরেই তার কাদেরের সাথে সাক্ষাৎ হয়। কাদেরকে দেখেই সে ভয়ে কুকরে যায়, পাগলের মতো দৌড়াতে থাকে, উদ্ভট চিন্তা তার মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে। পরের রাতে কাদের তার কাছে আসে সাহায্যের জন্য, তারা উভয়ে অর্ধ নগ্ন যুবতি নারীর মৃতদেহ নদীতে ফেলে দেয়।
পর দিন সকালে যখন যুবক শিক্ষক যুবতি নারীর মৃত দেহ আবিষ্কারের কথা শুনে, সে দিকবিদ্বিক শুন্য হয়ে যায়। অদ্ভুদ চিন্তা মাথার মধ্যে ঝড় তুলতে থাকে। সে একটু ভয়ও পায়, কাদের কি তাকে হত্যাকারি ভাবে? যুবতি নারীর মৃতদেহ গুপ্ত করার জন্য সে কেন কাদের কে সাহায্য করেছিল? তার মন, শরীর অবশ করার মত চিন্তার অবসান করার জন্য সে কাদেরের সাথে সাক্ষাৎ করতে চায়। যখন কাদেরের সাথে তার দ্বিতীয় বার সাক্ষাৎ হয়, কোন অজানা সত্য তার দুয়ারে কড়া নারে??? যুবতি নারীর হত্যাকারী কে? কেন যুবতি নারী নির্মম ভাবে বাঁশঝাড়ে খুন হলো? কোনো গোপন প্রেমের সুত্র কি সেখানে ছিল? নাকি শুধুই শরিরের ক্ষুধা ছিল? সব কিছু বিচার করে যুবক শিক্ষকের সিদ্ধান্ত কি ছিল? নাকি সে সিদ্ধান্ত নিতেই দ্বিধা বোধ করছিল? কি বিষয় তাকে এত ভাবাচ্ছিল? আদৌ কি সে তাঁর বিবেকের কাছে জয়ী হতে পেরেছিল? এত গুলো প্রশ্নের সমাধান শুধুমাত্র সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ রচিত ‘চাঁদের অমাবস্যা‘ উপন্যাস পড়ার মাধ্যমেই পাওয়া সম্ভব।
চাঁদের অমাবস্যা বুক রিভিউ । উপন্যাসের প্রেক্ষাপট
রচনার ভাগসমূহ
সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ রচিত “চাঁদের অমাবস্যা” একটি মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস। প্রেক্ষপট বলতে উপন্যাসটি কিছুটা ধর্মীয় অনুশাসন,বিত্তবানদের আধিপত্য নিয়ে লেখা। যেখানে বিত্ত্ববানদের আধিপত্যের কাছে সত্য হার মেনে যায়। সমাজের উচ্চ সম্মানের তলায় চাপা পড়ে যায় ন্যায় বিচার। মনুষ্যত্বকে জয়ী করতে যেয়ে, ধনীদের দোষের কথা যেখানে প্রকাশ করেই বিপদে পড়ে যায় নিম্নশ্রেনীর মানুষেরা। এমনই একটা বিষয়ের চিত্র ফুটে উঠেছে চাঁদের অমাবস্যা উপন্যাসে। তাছাড়া ধার্মিক গোছের মানুষের মাঝেও যে কলুষতা লুকিয়ে থাকে সেটাও প্রকাশ পায় সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর রচিত চাঁদের অমাবস্যা উপন্যাসটিতে। উপন্যাসে কাদের একজন দরবেশ হিসেবে পরিচিত যে সংসার থেকে পুরোটাই বিচ্ছিন্ন,তাছাড়া তার বড় ভায়েরাও অনেকটা ধার্মিক মনোভাব পোষন করেন। কিন্তু চরম নোংরা দুর্ঘটনাটা, হোক সেটা ইচ্ছা বা অনিচ্ছায়, কাদেরের দ্বারাই সম্পন্ন হয়।
চাঁদের অমাবস্যা উপন্যাসে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ উক্তি সমূহ
“সত্যই সত্যকে আকর্ষন করে”।
“যে বৃক্ষটি শাখা-প্রশাখা বিস্তার করে, সত্য রুপ ধারন করেছিল, মুল নেই বলে সে বৃক্ষটি নিমেষেই ধরাশায়ী হয়”।
“মানুষের ভাগ্য খামখেয়ালী এবং নির্মম হলেও মানুষ মায়া মমতাশূন্য নয়, অতি নিস্পৃহের নিকট ও অন্যের জীবন মুল্যহীন নয়”।
“মানুষের জীবনটা অতি ভঙ্গুর, একটুতেও মটকায়”।
“একটি কারনেই মানুষ মানুষের অন্তিম ব্যবস্থা না করে পারে না। সে কারন প্রেম, ভালবাসা”।
“খাঁটি মানুষ অসম্কোচে দোষঘাট স্বীকার করে, কিন্তু হৃদয়ের সৌন্দর্য সহজে উন্মুক্ত করে না”।
“যে ঝড়ের নাম জানা নেই, যে ঝড়কে দেখা যায় না,সে ঝড়কে চেপে রাখতে হয়”।
“যে কথা আকাশের সূর্য, চন্দ্রতারা, ধরনীর ফুল, লতা-পাতা-দূর্বাদল বা স্রোতস্বীনী নদী নির্বিঘ্নে বলতে পারে সে কথা বলা নিষেধ।
যে কথা হয়তো জীবন সম্মন্ধে একটি সরল কৌতুহল মাত্র, যার উৎস অজানার প্রতি মানুষের ভীতির মধ্যে সে কথা বলা নিষেধ”।“আদর্শ চরিত্র শুধু রুপকথায় বিরাজ করে,বাস্তব জগতে তার অস্তিত্ব নেই”।
“পুরুষের ওসব দুর্বলতা থাকেই, দোষটা আসলে মেয়ে লোকটির। দুশ্চরিত্রা হলে এমন অপঘাত মৃত্যু অবধারিত”।
সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর চাঁদের অমাবস্যা উপন্যাস নিয়ে বুক রিভিউ লেখার সময়, আরো বেশ কিছু উক্তির কথা মাথায় এসেছিল। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ এর এই বানীগুলিই সবচেয়ে বেশি মনে ধরেছে।
চাঁদের অমাবস্যা বুক রিভিউ । উপন্যাস নিয়ে নিজস্ব কিছু কথা
চাঁদের অমাবস্যা বুক রিভিউ লেখার শুরুতেই, আমরা জেনেছি চাঁদের অমাবস্যা একটি মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস। উপন্যাসটিতে আমরা প্রধান চরিত্র হিসেবে অবিবাহিত যুবক শিক্ষক আরেফ আলীকে দেখতে পাই। অনেকটা মেরুদন্ডহীন ,যার সত্য সাহসের বড় অভাব, একটু জটিলতা তাকে ঘোরের মধ্যে ফেলে দেয়। বাস্তব আর কল্পনাকে সে এক করে ফেলে। যদিও তিনি একটু ভীতু গোছের কিন্তু এই ভীরুতারও কারন আছে। একজন দরিদ্র শিক্ষক কিভাবে পেরে উঠতে পারে একজন বিত্তশালীর কাছে? যুবক শিক্ষক ভীতু হলেও একটু বিশ্লেষন ধর্মী। দেরিতে হলেও তিনি অর্থ বিত্তের কাছে হেরে যান নি, জয়ী হয়েছেন মনুষ্যত্ব নামক ছায়ার কাছে।
যুবতি নারী তার পরিচিত কেউ নন, তবুও তার নির্মম মৃত্যু তাকে ভাবিয়ে তুলেছে বহুবার। নিজের আশ্রয় চলে যাবে, উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে যাবে, বৃদ্ধ মাতাকে সাহায্য করতে পারবে না, এমনও অনেক ব্যক্তিগত স্বার্থের কথা আসলেও সে শেষ পর্যন্ত যুবতি নারীর হত্যার ঘটনা প্রকাশ করেছে, যুবতি নারীর জন্য ন্যায় বিচার সে এনে দিতে চায়।
বাঁশঝাড়ের ঘটনার সাক্ষী বলতে যুবক শিক্ষক, তারপর সে সাধারান শিক্ষক, উচু বংশের নামযশ ধারী কাদেরের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ বিশ্বাস করাটা সহজ হলেও মেনে নেয়া এতোটাও সহজ নয়, যুক্তিতেই এমনটা চলে আসে, সেটা যুবক শিক্ষক নিজেও উপলব্ধি করেছে অনেকবার। তবুও সে বিবেকের দহনে আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে, সে ঘটনাটি প্রকাশ করা নিজ দায়িত্ব মনে করেছে। এটা তার নিজের ধ্বংসের কারন ছাড়া আর কিছুই এনে দেয়নি, ফলাফল বলতে শুন্যতায় এসে দাড়িয়েছে। আইন তার কথা বিশ্বাস করেনি, একজন উন্মাদ ভেবেছে তাকে, পাগলের প্রলাপ হিসেবে গ্রহণ করেছে আর শেষে দোষী হিসেবে তাকেই ইঙ্গিত করেছে।
বাঁশঝাড়ের ঘটনা প্রকাশ করা আর চাপিয়ে রাখা দুটোই যুবক শিক্ষকের জন্য নিষ্ঠুরতা।যদি সে চেপে রাখে তাহলে সে বিবেকের দংশনে বিষিয়ে যাচ্ছে প্রতিটা মুহুর্ত আর প্রকাশ করলে কেউ বিশ্বাস করবে না দোষটা এসে পরবে তার উপর।
উপন্যাসটিতে কাদের চরিত্র টি গুরুত্বপূর্ভাবে প্রকাশিত হয়নি, তার দৃষ্টিভঙ্গিই পাঠকের অগোচরে রয়ে গেছে। তবে উপন্যাসের সমস্ত কথা চিন্তা কাদেরের দ্বারা ঘটিত বিষয় নিয়ে আবর্তিত হয়েছে যুবক শিক্ষরের মনে। বেশ কিছু চরিত্রের আনাগোনা থাকলেও তাদের কে খুব কমই প্রকাশ করেছেন লেখক। সব চেয়ে বেশি ফোকাস করেছেন বাঁশঝাড়ে যুবতি নারীর মৃত্যুর ঘটনা।
দরিদ্র মাঝির বউ এর সাথে কাদেরের প্রনয়ের কারন ভালবাসা ছিল কিনা এ নিয়ে সুস্পষ্ট ধারনা লেখক দেননি। তবে অবৈধ সম্পর্ক ছিল তা যুবক শিক্ষকের চিন্তা থেকে ধরে নেয়া যায়। কিন্তু ভালবাসা ব্যতিত প্রণয় সম্ভব কিনা এটাই প্রশ্নাতীত।
যুবতি নারীর মৃত্যু একটা দুর্ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। দুজনের সম্মতিতেই তারা(কাদের ও যুবতি নারী) বাশঁঝাড়ে দেখা করতে আসে। কাদের কেন তাকে হত্যা করবে? এমনটা চিন্তার বাইরে। যুবক শিক্ষকের উপস্থিতি বুঝতে পেরেই যুবতি নারী একটু চিৎকার দিয়ে ওঠে, কাদের তার গলা চেপে ধরে, যাতে চিৎকারের আওয়াজ না হয়। কথা হলো,তাদের দুজনের সম্মতি ছিল তাহলে কেন যুবতি নারী চিৎকার করলো? আর কাদেরই বা কেন গলা টিপে ধরলো? সে তো মুখ চেপে ধরতে পারতো কন্ঠ নালীই কেন ধরতে হলো। শুধু মাত্র ভয় পেয়েই কাদের যুবতি নারীকে হত্যা করে ফেললো? এখানেও একটু প্রশ্ন থেকে যায়। এমন হতে পারে যুবতি নারী চিৎকার করে প্রমান করতে চায় কাদের তাকে জোর করেছিল। তাহলে এখানে ভালবাসার প্রশ্নই উঠে না।আর ভালবাসা নেই বলেই যুবক শিক্ষকও কাদের কে ক্ষমা করতে পারে না।
আবার,যুবক শিক্ষক কাদের কে অনুসরন করেছিল বলেই দুর্ঘটনাটা ঘটেছিল, এমনটাও ভেবে নেয়া যায়। যুবক শিক্ষকের উপস্থিতি বুঝেই যুবতি নারী চিৎকার করেছে আর কাদের তার বংশ মর্যাদা, নিজের সম্মানের কথা ভেবে ভয় পেয়ে যুবতি নারীর গলা টিপে ধরে, মৃত্যু হয় একটি প্রানের।
কিছু কিছু ঘটনা এভাবে আকস্মিক ঘটে যায়, শুধুমাত্র ভয় মানুষের বোধ শক্তিকে লোপ করে দেয় জঘন্য খারাপ কাজের দিকে ঠেলে দেয়, একজন সহজ সুবোধ মানুষকেও।
চাঁদের অমাবস্যা উপন্যাসটিতে, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ এর নারীদের প্রতি একটা উক্তি ছিল এরকম,,,,,
“পুরুষের ওসব দুর্বলতা থাকেই, দোষটা আসলে মেয়ে লোকটির।দুশ্চরিত্রা হলে এমন অপঘাত মৃত্যু অবধারিত”
উক্তিটি ধনী ব্যক্তিদের সমর্থকদের, যারা মেয়েদেরকেই দোষী বলে বিবেচনা করে থাকে। এখানে কাদের বিবাহিত,, যুবতি নারীও বিবাহিত। মেয়েটা যদি দুশ্চরিত্রা হয়, ছেলেটা কম কিসে? উক্তিটি লেখার সময়টাতে যে লিঙ্গ বৈষম্য প্রকট ছিল তা বলার প্রয়োজনই পরে না। শুধু তখনকার সময়ে নয় বর্তমান সময়টাতেও এর বিপরীত নয়।
সব শেষে উপন্যাটির মাধ্যমে, মুলতই মানসিক চিন্তাটা কিভাবে মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে টলিয়ে দিতে পারে এমনই একটি চিত্র অঙ্কিত হয়েছে যুবক শিক্ষক চরিত্রের মাধ্যমে। তাছাড়াও ভয় মানুষকে ধ্বংস করে দিতে পারে, আর এটা পাঠকগণকে শিক্ষা দেয় যে, সর্ব সময়ে ভয়কে পরাজিত করার।ব্যক্তিস্বার্থকে বড় করে না দেখে অপরের জন্য চিন্তা করার ধারনাও পাঠকগণ পেয়ে থাকেন যুবক শিক্ষক চরিত্রের মাধ্যমে। সর্বোপরি সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ রচিত চাঁদের অমাবস্যা উপন্যাসটি ব্যতিক্রমধর্মী এবং তখনকার সময়ের প্রেক্ষাপটে খুবই ভালো একটি বই। চাঁদের অমাবস্যা বুক রিভিউ এর মাধ্যমে পাঠককে বইটি পড়ার জন্য আহবান জানাচ্ছি। বেশ কিছু অনলাইন বুক স্টোর রয়েছে, যেগুলো থেকে চাঁদের অমাবস্যা বইটি কিনে পড়তে পারেন।