গৌতম বুদ্ধের উপদেশ । জীবন গঠনে জনপ্রিয় নির্দেশ বাণীসমূহ
সিদ্ধার্থ গৌতম, যাকে আমরা বর্তমানে গৌতম বুদ্ধ হিসেবে চিনি। তিনি ছিলেন বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক। পিতার নাম শুদ্ধোধন এবং মাতার নাম মায়া দেবী। তাঁর স্ত্রীর নাম যশোধারা এবং তাঁদের একমাত্র পুত্রের নাম রাহুল। রাজকীয় জীবন ছেড়ে তিনি সন্যাস জীবন বেছে নিয়েছিলেন। অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে একসময় বোধি লাভ করেন বলে প্রচলিত আছে। তাঁর প্রখর অন্তঃদৃষ্টি মনুষ্য জীবনকে বুঝতে সহায়তা করেছিল। তাঁর প্রচলিত বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারীর সংখ্যা আজ দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়েছে। মানুষের সুখ, দুঃখ, বেদনা, মুক্তির পথ তিনি অবলীলায় বলে গিয়েছেন, যা আজো আমাদের চলার পথের সঙ্গী। আত্মপ্রকাশের অন্য এক আর্টিকেলে গৌতম বুদ্ধের পরিচয় এবং তাঁর আলোচিত সকল উক্তি আলোকপাত করা হয়েছে। এই আর্টিকেলে থাকছে, গৌতম বুদ্ধের উপদেশ বাণীসমূহ। যা কালের আবর্তে জনপ্রিয় এবং সব সময় উপযোগী।
গৌতম বুদ্ধের উপদেশ বাণীসমূহ
গৌতম বুদ্ধের উপদেশ বাণীসমূহ থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান আমাদের জীবনকে বুঝতে সাহায্য করবে। তাই প্রতিটি উপদেশ হৃদয়ে ধারণ করার অনুরোধ থাকবে।
“জগতে শত্রুতার দ্বারা কখনো শত্রুতার উপশম হয় না, মিত্রতার দ্বারাই শত্রুতার উপশম হয়।” ~ গৌতম বুদ্ধ
“যিনি উপদেশ দেন, অনুশাসন করেন এবং অসভ্যতা নিবারণ করেন তিনি অসতের অপ্রিয় এবং সৎলোকের প্রিয় হন।” ~ গৌতম বুদ্ধ
“মন ও শরীরের পক্ষে সুস্থ থাকার রাস্তা হলো – অতীতের জন্য শোক না করা আর ভবিষ্যতের জন্য চিন্তা না করা। বরং বুদ্ধি ও সৎভাবের দ্বারা বর্তমানে বাঁচার চেষ্টা করা।” ~ গৌতম বুদ্ধ
“ মা যেমন তাঁর নিজ পুত্রকে নিজের জীবন দিয়ে রক্ষা করে তেমনি সকল প্রাণীর প্রতি অপরিমেয় মৈত্রীভাব পোষণ করবে। ” ~ গৌতম বুদ্ধ
“যিনি তোমার ক্রুটি প্রদর্শন করেন ও তজ্জন্য ভৎর্সনা করেন সেই মেধাবীকে গুপ্তনিধির ন্যায় জানবে।” ~ গৌতম বুদ্ধ
“ভালো কাজ সবসময় কর। বারবার কর। মনকে সবসময় ভালো কাজে নিমগ্ন রাখো। সদাচরণই স্বর্গসুখের পথ।” ~ গৌতম বুদ্ধ
“তুমি যা ভাবো সেটাই হও, যা অনুভব করো সেটাই আকর্ষণ করো, যা কল্পনা করো তাই সৃষ্টি করো।” ~ গৌতম বুদ্ধ
“ক্রোধ সংবরণ কর। অহংকার পরিত্যাগ কর। সকল বন্ধন অতিক্রম কর।” ~ গৌতম বুদ্ধ
“অতীতকে প্রাধান্য দিও না, ভবিষ্যত নিয়ে দিবাস্বপ্নও দেখবে না। তার চেয়ে বরং বর্তমান মুহূর্ত নিয়ে ভাবো।” ~ গৌতম বুদ্ধ
“কোনো পাপকেই ক্ষুদ্র মনে করো না। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পাপই জমা হতে হতে মূর্খের পাপের ভান্ড পূর্ণ করে ফেলে।” ~ গৌতম বুদ্ধ
“যিনি তোমার ত্রুটি প্রদর্শন করেন ও তজ্জন্য ভৎসনা করেন সেই মেধাবীকে গুপ্তনিধির ন্যায় জানবে।” ~ গৌতম বুদ্ধ
“সত্যিকারভাবে ক্ষমতা নিয়ে বাঁচতে হলে নির্ভয়ে বাঁচো।” ~ গৌতম বুদ্ধ
“ভালো কাজ সবসময় করো, বারবার করো, মনকে সবসময় ভালো কাজে নিমগ্ন রাখো,সদাচরণই স্বর্গসুখের পথ।” ~ গৌতম বুদ্ধ
“জীবনের প্রথমেই ভুল হওয়া মানেই এই নয় এটিই সবচেয়ে বড় ভুল। এর থেকে শিক্ষা নিয়েই এগিয়ে যাও।” ~ গৌতম বুদ্ধ
“পরের কৃত ও অকৃতকার্যের প্রতি লক্ষ্য না রেখে নিজের কৃত ও অকৃত কার্যের প্রতি লক্ষ্য রাখবে।” ~ গৌতম বুদ্ধ
“জীবনে ব্যাথা থাকবেই, কিন্তু কষ্টকেই ভালোবাসতে শেখো।” ~ গৌতম বুদ্ধ
“সকলেই দণ্ডকে ভয় করে, জীবন সকলের প্রিয়। সুতরাং নিজের সাথে তুলনা করে কাউকে প্রহার করবে না কিংবা আঘাত করবে না।” ~ গৌতম বুদ্ধ
“চাঁদের মতোই মেঘের আড়াল থেকে বেরোও এবং প্রকাশিত হয়ে ওঠো।” ~ গৌতম বুদ্ধ
“ নিজেকে নিয়ন্ত্রণ কর। তারপর অন্যকে অনুশাসন কর। নিজে নিয়ন্ত্রিত হলে অন্যকেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করাই কঠিন।” ~ গৌতম বুদ্ধ
“অন্যকে কখনও নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করো না, নিয়ন্ত্রণ করো কেবল নিজেকে।” ~ গৌতম বুদ্ধ
“কাউকে কটু কথা বলবে না। কারণ সে-ও কটু প্রতু্ত্তর দিতে পারে। উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় তোমার জন্যেও কষ্টদায়ক হবে। দন্ডের প্রতিদন্ড তোমাকেও স্পর্শ করবে।” ~ গৌতম বুদ্ধ
“প্রত্যেকটা দিনের গুরত্বকে বুঝুন, প্রত্যেকদিন একটা নতুন ব্যক্তির জন্ম একটা নতুন উদ্দেশ্যকে পূরণ করার জন্য হয়ে থাকে | এইজন্য একদিনের গুরত্বকে বুঝুন।” ~ গৌতম বুদ্ধ
“তুমি মুখে কী বলছো সেটি কোনো বিষয় নয়, বিষয় হলো তোমার কাজ।” ~ গৌতম বুদ্ধ
“সবকিছুর জন্য মনই আসল। সবার আগে মনকে উপযুক্ত করো, চিন্তাশীল হও। আগে ভাবো তুমি কী হতে চাও।” ~ গৌতম বুদ্ধ
“পণ্ডিত ব্যক্তির সেবা করা এবং পূজনীয় ব্যক্তির পূজা করা উত্তম।” ~ গৌতম বুদ্ধ
“মাতা-পিতার সেবা করা, স্ত্রী-পুত্রের উপকার সাধন করা এবং নিষ্পাপ ব্যবসা বাণিজ্য দ্বারা জীবিকা নির্বাহ করা উত্তম মঙ্গল।” ~ গৌতম বুদ্ধ
“নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করো। তারপর অন্যকে অনুশাসন করো। নিজে নিয়ন্ত্রিত হলে অন্যকেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করাই কঠিন।” ~ গৌতম বুদ্ধ
“জীবনের খুব কম মানুষের জীবনে পরিপক্কতা আসে। সঙ্গী হিসেবে এই পরিপক্কতাকে তোমার অর্জন করতে হবে। তবে তা ভুল মানুষকে অনুসরণ করে নয়। এই পরিপক্কতা অর্জনে বরং একলা চলো নীতি অনুসরণ করো।” ~ গৌতম বুদ্ধ
“ধৈর্য হলো গুরুত্বপূর্ণ জিনিস | মনে রাখবে, একটা কলসি বিন্দু বিন্দু জলের দ্বারাই ভর্তি হয়।” ~ গৌতম বুদ্ধ
“রেগে যাওয়া মানে নিজেকেই শাস্তি দেওয়া।” ~ গৌতম বুদ্ধ
“ জগতে মাতা ও পিতার সেবা সুখকর। শ্রমণ ও পণ্ডিতদের পরিচর্যা জগতে সুখ দায়ক। বার্ধক্য পর্যন্ত শীল (নীতি) পালন সুখকর। শ্রদ্ধায় প্রতিষ্ঠিত হওয়াই সুখদায়ক। প্রজ্ঞালাভই সুখ জনক, পাপ না করাই সুখাবহ।” ~ গৌতম বুদ্ধ
“রাগের সমান অগ্নি নেই। দ্বেষের সমান গ্রাসকারী নেই। মোহের সমান জাল নেই। তৃষ্ণার সমান নদী নেই। তাই রাগ-দ্বেষ-মোহ ও তৃষ্ণা পরিত্যাগ করতে হবে।” ~ গৌতম বুদ্ধ
“মৈত্রী দ্বারা ক্রোধকে জয় করবে, সাধুতার দ্বারা অসাধুকে জয় করবে, ত্যাগের দ্বারা ক্রোধকে জয় করবে ও সত্যের দ্বারা মিথ্যাকে জয় করবে।” ~ গৌতম বুদ্ধ
“আলোকিত হতে চাইলে প্রথমে নিজের মনকে নিয়ন্ত্রণ করো। ~ গৌতম বুদ্ধ
গৌতম বুদ্ধের উপদেশের পাশাপাশি আমরা আরো যেসকল গুণী ব্যক্তির উপদেশগুলো জেনে নিতে পারি।
মহাত্মা গান্ধীর উক্তি । জনপ্রিয় বাণী ও উপদেশ সমূহ
শেখ সাদীর উক্তি ও উপদেশ বাণী সমূহ । বদলে যাবে জীবন দর্শন
গৌতম বুদ্ধের উপদেশ বাণীসমূহকে জীবনের আয়না বলা যেতে পারে। গৌতম বুদ্ধের উপদেশ থেকে আমরা জীবনের যে মাহাত্ম্য সম্পর্কে জেনেছি, তা শুধু পড়ে চলে গেলেই হবে না। তা হৃদয়ে পুরোপুরি ধারণ করার মাধ্যমেই আমরা জীবনের পরিপুর্ণ জ্ঞান আহরণ করতে পারবো।