সাইকো সিরিয়াল কিলার ০৭ । মোঃ টুটুল ইসলাম । আত্মপ্রকাশ নির্বাচিত গল্প

মোঃ টুটুল ইসলামের লেখা ‘সাইকো সিরিয়াল কিলার ০৭’ থ্রিলার ছোটগল্পটি ‘ আত্মপ্রকাশ নির্বাচিত গল্প প্রতিযোগিতা-১’ এ সপ্তম স্থান অর্জন করে।

ভিক্টিম নাম্বারঃ ১২
নামঃ অামিন মোল্লা।
পেশাঃ বিলেতে ব্যবসা করে। মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গ বিক্রি করে। কিভাবে জানি ডাক্তারির সার্টিফিকেট বানিয়ে বিক্রি করছে মানুষের জীবন।
এবার তাকে পাওয়া যাবে ভারতে। অামার জাল পাসপোর্ট, ভিসা সব তৈরি। পরশুদিন অামার ফ্লাইট। লোকটা অনেক নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে বাস করে। সমকামীতার বহুত পুরোনো রেকর্ড অাছে তার।
তবে কেননো জানি মনে হচ্ছে লোকটাকে মারতে তেমন কষ্ট করতে হবে না। তাই বেশি ভাবছি না। যদি নকল ডাক্তার হয়, তবে বেশি কষ্ট করবোনা। মেরে চলে অাসবো।
প্রায় ৯৮ মিনিট পর ট্রেন ভারতের মুম্বাই শহরের মধ্যে ঢুকে গেলো। মনে মনে ভাবছি কষ্ট করে পাসপোর্ট, ভিসার কি দরকার?
পরে মনে পড়লো বাকি ৩ জন দেশের বাহিরে। যাদের জন্য লাগতে পারে।
মাথায় চিন্তা একটাই। ওকে ধরতে হলে অামাকে ওর দলে ঢুকতে হবে। তার জন্য সুযোগ হচ্ছে হাবিজাত সিং। পূর্ব পপরুষের পাঞ্জাবে ছিলো। প্রেমে পড়ে অাসামের মেয়ে বিয়ে করে চাকরির খোজে এসে অাসামেই বাস করেন। এখন এক হিসেবে পুরোদস্তুর অাসামের লোক। অামিন মোল্লার সিকিউরিটি স্টাফ হেড। ট্রেন থেকে নেমে চলে গেলাম মুম্বাই লাকনাও হোটেলের সামনে থেকে ৫ মিনিট দূরের একটা সস্তা মোটেলে। এখানে অাজকে রাত কাটিয়ে কালকে তিন তারকা হোটেলে উঠবো। অামার স্যাতসেতে পরিবেশে খুবই ভালো ঘুম হয়। মোটেলে ঢুকে মুখ ধুয়ে ঘুম দিলাম। ঘুম থেকে উঠলাম মসজিদের অাজান শুনে। হঠাৎ মাথার মধ্যে কিছু জিনিস মনে পড়লো। কতদিন হয়েছে বাসা থেকে নামাজের জন্য বের হয়ে নামাজ পড়ে বাসায় না গিয়ে মুন্সি বাড়ির ছাদে অাড্ডা মারতাম। কিন্তু তখনই কেনো জানি একটা সত্ত্বা ভেতর থেকে ডেকে বললো। দূর্বল হয়ে পড়ছিস। তোর রক্ত দরকার। ৪ জনের কলিজা দরকার। স্মৃতি মানুষের মন অার মানসিকতা দূর্বল করে দেয়। ল্যাপটপ বের করে টানা ২ টি হরর ছবি দেখলাম। ভালো লাগলো। তারপর খাবারের জন্য বের হলাম। পাশের হোটেল থেকে খেয়ে রুমে ঢুকলাম। তারপর বিল মিটিয়ে তিন তারকা হোটেলে উঠলাম। এবার শুরু অভিনয় ও রূপ বদলের খেলা। সুন্দর করে নিজেকে অাসামের পাঞ্জাবী বাঙ্গালী মানুষের মতো করে সাজতে হলো। গন্তব্য হাবিজাত সিং।
দুপুর ২:২০ এ যখন তার বাসায় কলিং বেল চাপ দেই। তখন সে খাচ্ছিলো। হঠাৎ বিরক্ত করায় সে বিব্রত হয়ে পড়েছিলো। তবুও সামলে জিজ্ঞাসা করলো,
হাবিজাতঃ কন হ্যা?
অামিঃ অামি গুরুজিত। অাপনার দোস্ত মেহেরুন মিলকার ছেলে।
হাবিজাতঃ ও ভিতরে অাসো।ও বলেছিলো একটা চাকরির দরকার। সিকিউরিটি গার্ড হলেও হবে।
অামিঃ জ্বি।
হাবিজাতঃ অাচ্ছা ঠিকাছে কোনো সমস্যা নাই। কাল থেকে সকাল ৭:৩০ এ অামার সাথে মেডিকো হাসপাতালে যাবে। ওখানেই কাজ তোমার।
অামিঃ অাপনার হাজার কোটি শুকরিয়া চাচাজান। ভালো থাকবেন।
হাবিজাতঃ অারে ব্যাটা, কি বলিস। তোর বাপ অামার বন্ধু। বন্ধুর ছেলের জন্য কিছু করাটাই সৌভাগ্য।
অামিঃ অাচ্ছা চাচা এখন উঠি।
হাবিজাতঃ ঠিকাছে। কালকে সকাল ঠিক ৭:৩০ চলে এসো।
তারপরের দিন সকাল ৭:৩০ এ হাজির হলাম মেডিকো হাসপাতালে। এবারের পালা খুজে বের করা অামিন মোল্লাকে। হাসপাতালে গিয়ে সোর্স থেকে জানতে পারলাম অামিন মোল্লার কেবিন ৭ নং ফ্লোরে, ৭০৬ নং রুম।
প্রায় ১ দিনে মোটামোটি সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করে ফেলেছি।
কেবিন বয় অার স্টাফদের কাছে তিনি দেবতুল্য মানুষ। তিনি ফ্রি তে প্রতিদিন অন্তত ২০ জন রোগী দেখেন। মহান লোক।
অামি মনে মনে ভাবি। হুমম ২০ জন দেখেন। কিন্তু তাদের মধ্যে থেকে কম করে হলেও ৫/৬ জন তার শিকার যাদের রক্তের গ্রুপ ও টিস্যু কোষ মিলে গেলে তাদের বিক্রির জন্য কাস্টোমার খোজেন। অার সুন্দরী তরুণী হলে বিলেতে পাচার কিংবা তার বন্ধুদের কাছে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেন।
কাজ শেষে হোটেলে চলে এলাম। কাল শনিবার। অামিন মোল্লা অর্ধ বেলা কাজ করে বাসায় যাবেন। সেদিন অামি কোনো কারণ দেখিয়ে হাবিজাত সিং এর থেকে ছুটি নেই। তারপর পিছু নিয়ে চিনে অাসি তার বাগান বাড়ি। প্রতি শনিবার এই বাড়িকেই তার সব কুকাজ চলে। অপারেশন থেকে নারী পাচার অার রাতে তার সমকামীতার লীলা খেলা। এবারের পালা তার বাড়ির ভেতরকার খবর জানা। খুব ছোট্টো একটা গোয়েন্দা রোবোটিক মশা যাতে ড্রোন ক্যামেরা সেট করে পাঠিয়ে দেই। প্রায় ১১ মিনিটের মতো পর্যবেক্ষণ করে দেখলাম। মোট দরজা তিনটা। যার একটা মূল ফটকের। অপর ২ টির একটা Basement কক্ষে যাবার অার একটা বৈঠক খানা। বাড়ির চারপাশে কোনো গৃহরক্ষী নেই। থাকবে কি করে অাশে পাশে গাছ অার জঙ্গল। শহর থেকে ২৬ কি:মি: দূরে। তবে হ্যা ব্যবসায়ীদের সাথে যখন অালোচনায় বসে তখন মোট ১৩ জন গৃহরক্ষী চলে অাসে। শালার মারতে বহুত কষ্ট করতে হবে। তবে ডাক্তারের ব্যাপারে অারো কিছু জানতে হবে।
তখনই হঠাৎ মোবাইলটা ভাইব্রেশন করে উঠলো। ভারতীয় সিমে ঢুকতে কষ্ট কম হয় প্রাইভেট নাম্বার থেকে। ফোনটা রিসিভ করলাম।
সেঃ কেমন বুঝছো? হয়তো মারতে তোমার কষ্ট হবে। কিন্তু মনে রেখো ওরা সবাই খুবই ভযানক। ওদের মারতে না পারলে তুমি মরবে। কারণ তুমি সবার নজরের লক্ষ্যে। মনে রেখো ওদের একজন বেঁচে থাকলে তুমি তোমার জীবনের উল্টো ঘড়ি গুণতে থাকো। সময় পাবে ৭ মাস। তবে সমবায়ের নীতি মেনে ধীরে ধীরে না গিয়ে সবাইকে অাঘাত করো। কিন্তু যাতে ক্ষতি তোমার না হয়। ডাক্তারকে হাসপাতলে মারলে খুব সুবিধা হবে। অনেক ইন্সট্রুমেন্ট পাবা। অাবার মেডিসিন ও পাবা। অপারেশন করতে পারবা। মোট কথা খুবই সহজে কাজ সারতে পারবা। ও কি করে নাকি পাপ করে সেটা অাইন দেখবে। তোমার কাজ অামিন মোল্লাকে জীবনের দাম বুঝিয়ে দেয়া। ঠিকাছে। কারপর ফোনটা কেটে গেলো।
সাইকোঃ মনের মধ্যে এই প্রশ্ন সর্বদা ঘুরে বেড়ায়। অামার ভেতরকার কথা,চিন্তা, কথা কি করে সে জানে অামি ব্যাপারটা বুঝিনা বা ধরতে পারছিনা। যাই হোক

((২))
সাইকো এখন যাচ্ছে মুম্বাই এর একটা দামি পার্লারে। সে একজন কে খুজছে। তার নাম পারমিতা সেন। দেখতে এক অষ্টাদশী নারী। যার বক্ষের স্তন জোড়া যেনো পুরুষকে কামার্ত করতে সদাক্ষণ প্রস্তুত। ঠোটের ভাজে যেনো সর্বদা এক মোহ নেশা কাজ করে। সাইকো বারে ঢুকেই টার্গেট খুজে বের করে ফেললো। পার্লারের এক কর্ণারে বসে অাছে। কে বলবে এর একটা ৮ বছর বয়সী ছেলে অাছে। স্বামী এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যবসায়ী। সাইকোকে নতুন কিছু করে তাকে বশ করতে হবে। যেনো অাগামী ৪ দিনের সধ্যে ডাক্তারকে মেরে ফেলতে সমস্যা না হয়। পারমিতা সেনের সামনে গিয়ে বসলো। এখানে ছেলে মেয়ে উভয়েরই পার্লার ট্রিটমেন্ট দেয়া হয়। পারমিতার সামনে সাইকো বসে থেকে বারবার তার বক্ষ অার ঠোটের দিকে নজর যাচ্ছে। যদিও সে জানে এইসব তাকে অাকর্ষণ করে না। তার এসব করতে হচ্ছে কেবলই পারমিতাকে তার দিকে তাকাতে বাধ্য করার জন্য। হঠাৎই পারমিতা চোখ তুলে তাকালো। সাইকোর চোখের নেশার ফাদে পড়তে থাকলো পারমিতা। চোখ দিয়ে মোহে ফেলা খুব ভালো করেই জানে সাইকো। কিছুক্ষণ পর সাইকো নিজে থেকে উঠে পারমিতার পাশে গিয়ে বসলো। নিজে হাত বাড়িয়ে হ্যান্ডশেক করতে চাইলো। পারমিতাও না করতে পারলোনা কেনো জানি। সাইকো জানতো, মহিলার এতো ক্ষমতা হয় নি। তারপর পারমিতাকে অবাক করার জন্য প্রথম চালটা দিলো।
সাইকোঃ তুমি পারমিতা সেন। বাড়ি কলকাতার নর্থ ব্লকের পশ্চিম সেনগুপ্ত পাড়ার ২৭ নম্বর বাড়ির ৫ নং ফ্লোরের ৫০২ নং ফ্ল্যাট।
পেশায় ডাক্তারের সহকারী।
বাসায় ৮ বছরের ছেলে, শ্বাশুড়ি, অার স্বামী ব্যবসায় ব্যস্ত। খুবই পরিশ্রমী। নিজেকে একা রাখতে পারোনা। তাই তো গত ২ মাস চেষ্টা করেও একটু কথা বলতে পারলাম না।
পারমিতাঃ অবাক হয়ে! কি! অামার ব্যাপারে এতকিছু জানেন। অার ২ মাস অামার পিছু করছেন। অামি জানিনা।
সাইকোঃ না জানোনা। কেনোনা জানতে দেইনি। গত ২ মাস কবে কোথায় যাও, কি করো তোমার সব খবরই অামার কাছে অাছে। কিন্তু শুধু তুমি নেই।
পারমিতাঃ কি ধরণের অসভ্যের মতো কথা বলছেন। অাবার অামাকে ফলো করছেন। অামি কিন্তু পুলিশে কল করবো।
সাইকোঃ দেও। গত ২ মাসে যতটুকু পাগল হয়েছি, পুলিশের কাছে দিলে কি করবে? অামি পাগল হয়ে গিয়েছি। কেনো জানিনা। প্রথম দিকে ভাবতাম ছি তুমি বিবাহিত। ছেলে অাছে। কিন্তু পরে যখন জানতে পারলাম এই সৌন্দর্য অার যৌবনের কোনো পরোয়া না করে স্বামী টাকার জন্য তোমাকে ছেড়ে থাকে। তোমার সমস্ত খুশি, জৈবিক চাহিদা সব নষ্ট করে। তারপর থেকে তোমার প্রতি কেনো জানি ভালোবাসাটা একটা অনুতপ্ততায় পরিণত হয়। তুমি খুবই কষ্টে অাছো। সেটাও জানি।
সাইকো খুব ভালো করেই জানে মানুষের সাইকোলজি এবং ইমোশনে অাঘাত করে তা নিয়ে খেলতে।
এসব কথা পারমিতাকে দূর্বল করে দিচ্ছে।
হঠাৎই পারমিতা কেঁদে উঠলো। নিজে থেকেই বলতে থাকলে কাঁদতে কাঁদতে।
ও একটা অমানুষ। শুধু টাকাই চিনে। কখনো মানুষ মনে করেনা অামাকে। শুধু দৈহিক চাহিদা মেটাতে অামাকে ব্যবহার করতো। তারপর ছুগে রেখে দিতো। ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে অামি কিছুই করতাম না। সব ছেলেরাই এক।

তখনই সাইকো পারমিতার হাতে হাত রেখে অপর হাত দিয়ে পারমিতার চিবুক উপরে করে পারমিতার কপালে চুমু দিলো। ঘটনা এত দ্রুত ঘটলো এবং অাবেগের জন্যই পারমিতা হতবিহ্বল হতে পারলোনা হয়তো। তখনই তার ডাক ভেতর থেকে অাসলো। যাবার অাগে সাইকো বললো। তোমার জন্য অপেক্ষা করবো। পারমিতা হঠাৎ ই যেনো নিজের অস্তিত্ব অনুভব করছে। কেনো যেনো মনে হচ্ছে ও যেনো মানুষ। কেউ তো ওর মন নিয়ে ভালোবাসায় পূর্ণতা দিবে। এই চিন্তায় হঠাৎই ঠোটের কোণায় হাসি ফুটলো তার। ভেতরে চলে গেলো। প্রায় সোয়া ২ ঘন্টা পর বের হলো। দেখলো সাইকো ঠায় বসে অাছে। পারমিতাকে দেখে উঠে দাড়ালো। তারপর তাকে সাথে নিয়ে বের হলো।
পারমিতা বললো অামি গাড়ি নিয়ে এসেছি। সাইকো বলে উঠলো। চলো তুমি গাড়ি চালাবে তারপর অনেক দূরের যাবো। লং ড্রাইভ। তুমি অার অামি।
পারমিতা যেনো সন্দেহ হলো। তখনই সাইকো হাত দুটো বাড়িয়ে বললো বিশ্বাস করো, ঠকবেনা। তখনই যেনো সমগ্র সুখ পারমিতাকে জাপটে ধরলো। গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পড়লো অজানার উদ্দেশ্যে। কথায় কথায় এবার অাসলো অামিন মোল্লার ব্যাপারে। খুব চালাকি ও সূক্ষ্নতার সাথে সাইকো কাজ করলো পুরো ব্যাপারটাতে। এই তথ্য জানতে, ওই তথ্য জানতে ধীরে ধীরে সব গোপন তথ্য জেনে নিলো অার পারমিতা বুঝতেও পারলোনা। প্রায় ৪ ঘন্টায় মোট ২১ টি প্রশ্ন করলো অামিনের ব্যাপারে। তবে তা ছিলো সম্পূর্ণ এবং যথেষ্ট।
তারপর একটা ছোটো হোটেলে খাবার খোয়ে বাড়িরে দিকে ফিরতে থাকলো। হোটেলের ঠিক বিপরীত দিকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে সাইকো নিজের বাসা বলে নেমে গেলো। কালকে অাবার দেখা হবে। অাসারর অাগে পারমিতার কপালে চুমু দিয়ে অাসলো। তারপর তাকে বললো।
সাইকোঃ অামারটি দেও।
পারমিতা লজ্জা পেয়ে বললো। এখানে?
সাইকো বললো। অাচ্ছা থাক তোমার লজ্জা পেলে হবে না। মুখটি খানিকটা কালো করে।
তারপর পারমিতা তাকে গাড়ির ভেতরে টেনে নিয়ে তাকে সহ চালাতে লাগলো। গাড়ি থামলো এক বিশাল খালি জায়গায়। সেখানে থেমেই পারমিতা পাগলের মতো নিজেকে সপে দিতে থাকলো সাইকোর কাছে।
সাইকো নিজের সমস্ত শক্তি প্রয়োগ করে পারমিতার সুখ ঠিকরে দিয়ে ভরপুর করে দিলো। বাসায় যাবার অাগে পারমিতাকে বললো পরশু তোমার হাসপাতালে দেখা হচ্ছে। তবে গোপনে দেখা করবো। তুমি অপক্ষা করো।

হোটেলে ফিরেই সাইকো গোসল করতে লাগলো অার নিজের প্রতি ঘৃণা জন্মাতে লাগলো। কি করলো। মেয়েটার বিশ্বাস অার সতীত্ব।
ছি! ছি!. হঠাৎ ই ফোনটা বেজে উঠলো ধরতে মন চাচ্ছেনা। তবুও ধরলো। তারপর সেখান থেকে অাওয়াজ অাসতে লাগলো।
যা করেছো ভালো করোনি, খারাপও করোনি। তবে তুমি নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রায় হারিয়ে ফেলছো। এই ভিক্টিমকে শেষ করার পর তুমি অামার কাছে চলে অাসবে। তোমাকে অামার ট্রেনিং এর অাবার দরকার। ১৪-১৫ দিনের মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবা।
কাল বিশ্রাম করবা। পরশু শেষ করেই দেশে ফিরবা। তারপর অামার কাছে চলে অাসবা। ফোন কেটে গেলো।
গোসল শেষ করে সে বের হলো। সব তথ্য একটা চিত্রের মতো করে ঠিক করে সাজালো। কিসের পর কোন দিকে যাবে। কোন কাজটা অাগে করলে ভালো হয়। সব ঠিক করলো তারপর খাবার খেয়ে ঘুম দিলো। সকালে উঠে বের করলো ব্যাগ। একটা টিক কিট ব্যাগ, অন্যটি পারমিতার মোবাইল ব্যাগ। যাতে তার হাসপাতালের কিছু গুরুত্বপূর্ণ কার্ড ছিলো। সেখান থেকে তথ্য ও নাম্বার যা দরকার নিয়ে নিলো। এবার খুব সহজেই ভেতরে ঢুকতে পারবে। তারপর সে বেরিয়ে গেলো। সন্ধ্যায় ফিরে এলো। এতক্ষণ সে পারমিতার সাথে সময় কাটিয়ে অার একটু বিশ্বস্থ হলো। অার ফোন সহ সব ব্যাগে চুরি করে ঢুকিয়ে দিলো। যা পারমিতা বুঝতেও পারেনি। সাইকো পারমিতার নাম্বার থেকে মেসেজ দিয়ে দিলো, হাসপাতালে অামিন মোল্লার কাছে তার এক রোগীর সিরিয়াল লাগবে। হাসপাতালের কতৃপক্ষ জানবে মেসেজটি পারমিতা করেছে। তারপর বাকি কাজের জন্য অামিন মোল্লার কাছে ব্যক্তিগত সময় চেয়ে নিলো।
সাইকো জানতো পারমিতা নিজের কামের জ্বালা মেটায় অামিন মোল্লাকে দিয়ে। মনে মনে মাগী বললেও বাহিরে ভালোবাসা দেখালো।
বাসায় এসে সমস্ত প্ল্যান রিভিউ করে, সব জিনিস পুরো গুছিয়ে নিলো। মাথা ঠান্ডা রাখতে খুব দ্রুত ঘুমিয়ে গেলো। তারপর সকালে সমস্ত ব্যাগ, কাপড় সব এক ব্যাগে রেখে বেড়িয়ে গেলো। এবার শেষ করেই টিক কিট ব্যাগ নিয়ে মুম্বাই থেকে বাংলাদেশে উড়াল দিবে। কেননা ওর প্ল্যান অনুযায়ী সব জানতে মানুষের যে সময় লাগবে ততক্ষণে ট্রেনে করে সাইকো বাংলাদেশের সীমান্তে পৌছে যাবে।
কারণ অামিন মোল্লা অাজকে কেবলই পারমিতার কেসটা দেখবে। বাকি সব ক্যান্সেল।
হাসপাতালের সামনে নিজেকে গার্ডের পোশাকে ঢুকে পড়লো। ঠিক ১১:০০ টায় পারমিতাকে মেসেজ দিল অামি টয়লেটে তুমি অাসো। অাসতেই সে চুমু দিলো পারমিতার ঠোটে। তারপর বললো যাতে কেউ সন্দেহ না করে তাই এভাবে এসেছি। তুমি দাড়াও অামি পোশাক পাল্টে বের হচ্ছি। তারপর পারমিতার সামনেই পোশাক পাল্টালো সাইকো। পারমিতা সাইকোকে বুঝিয়ে দিলো চোখের ইশারায় তারও ট্রিটমেন্ট চাই। সাইকোও সমান তালে বুঝিয়ে দিলো। এবার বেড়িয়ে খুব সুন্দর করে অামিন মোল্লার রুমে ঢুকলো। তারপর ঢুকে কথা বললো।
পারমিতা বর্তমানে বাথরুমে অজ্ঞান। এমন এক চেতনা নাশক দিয়েছে। যাতে তিনদিনেও তার জ্ঞান না অাসে।
মোল্লা প্রথমেই বললো, ভিতরের কেবিনে যেতে। কারণ সে নাকি স্পেশাল, কারণ পারমিতা বলেছে। এবার সে ভেতরে ঢুকলো। তারপর ভেতরে ঢুকতেই পকেটে থাকা এক্সোথার্মাল নামক কেমিকেল শুকিয়ে অজ্ঞান করে দিলো অািমনকে। এবার তাকে কেবিনের সাথে খুব দ্রুত বেঁধে দিলো। যাতে লড়তে না পারে। তারপর গলার ভোকাল কর্ড নষ্ট করে দিলো। এবার জ্ঞান ফিরাতে চেতনাবৃদ্ধির ঔষুধ দিয়ে দিলো। ৩ মিনিটের মধ্যে হুশ ফিরলো অামিনের। অাবার সেই ঔষুধ দিলো যাতে তার শরীরে এমন অবস্থা হয় যে চিমটি দিলেও মনে হবে চামড়া কেটে দিয়েছে।
তারপর হাতে গ্লাভস পড়ে সাইকো অপারেশন শুরু করলো। প্রথমে পায়ের হাটুর হাড্ডির মধ্যে দিয়ে কাচি ঢুকিয়ে দিলো। চিৎকারে শব্দ বেরোলো না। তারপর মেডিক্যেল হাতুড়ে দিয়ে বাড়ি দিতে লাগলো। তারপর হাতের কনুইয়ে। এবার অাঙ্গুলের পালা। নখের মধ্যে দিয়ে সুই ফুটোতে লাগলো। কাচি দিয়ে মাংস অালাদা করে দিচ্ছে। তারপর দাড়ালো চাকু দিয়র নখের প্রততিটি অংশে কোপাতে লাগলো। নখ উপড়ে ফেললো। তারপর অাসলো তার বুকের উপর। সার্জারির চুরি ধ্রীরে ধীরে বসিয়ে টানতে লাগলো। তারপর পেট, শেষে লিঙ্গ ও শুক্রাশয়। কেটে ফেললো সরাসরি। ২ টুকরা করে এবার গেলো ডানপাশে। পাশ থেকেই কিডনিতে চাকু দিয়ে খোচাতে লাগলো। অামিন মোল্লা জীবন ভিক্ষার জন্য চাইতেও পারছেনা। মৃত্যু ভিক্ষা চাইছে। তারপরেই সুইয়ের মতো নড দিয়ে চোখ উপড়ে দিলো। দুই পায়ের তালুতে ৪ টি রড স্টিক ভরে দিলো। মাথায় কাচি ঢুকিয়ে তা স্ক্রু ড্রাইভারের মতো ঘুরাতে লাগলো। ডেটল লাগতেই অািমনের জীবনের বাচার ইচ্ছা নাই হতে থাকলো। পকেটে থাকা লবণ, মরিচ ঢলতে থাকলো কাটা চামড়ার দেহে। ২ কিডনি, বুক, অার চোখ শেষ হতেই। মস্তিকের জন্য মারা যায় অামিন মোল্লা। তারপর খুব দ্রুত মগজ অার কলিজাটা বের করে নিলো। তবে মগজটা বের করে ময়লার ডাস্টবিনে ফেলে দিলো। কলিজাটা প্যাকেটে করে পার্সেল পাঠাতে হবে। এবার টিক কিট ব্যাগে রাখা পোশাক খুলে পাল্টে নিলো। অর এসিড ঢেলে দিলো। গন্ধ যাতে এখনই না ছড়ায় তাই এসি ফুল স্পিডে ছেড়ে দিয়ে দুটো দামী ব্র্যান্ডের রুম স্প্রে করে দিলো। যাবার অাগে “”দ্যা মামী রিটার্নস”” ছবির সেই পোকাগুলোর মতো পোকা ছেড়ে দিয়ে গেলো।
তারপর সম্পূর্ণ পরিপাটি হয়ে অামিনের ডাক্তারের এপ্রোন পড়ে কেবিনের দরজা অাটকিয়ে মুখে মাস্ক পরে বেড়িয়ে গেলো।
কেউ ধরতেই পারলোনা। বেড়িয়েই ট্যাক্সি অাগেই রেডি ছিলো। সরাসরি মুম্বাই স্টেশনে ট্রেন ধরলো। তাতে চড়ে বসলো। মাত্র ৪ মিনিট পরেই ট্রেন ছেড়ে দিলো। তারপর গন্তব্যে। ট্রেন যখন বাংলাদেশে ঢুকে ততক্ষণে সিম কার্ড, মোবাইল সবই নদীর তলে। এখন তাকে কয়েকদিন বিশ্রাম অার ট্রেনিং এ থাকতে হবে। তবে হঠাৎই পারমিতার কথা মনে পড়ছে।
সে বুঝতে পারছে সেও মানুষ। তবে সে যে সাইকো। ঠোটের কোণে মুচকি সেই রোম দাড়া করানো হাসিটা অাবার তাকে জেকে ধরলো। পরের ভিক্টিমকে মারার জন্য প্রাণ হাষফাস করতে লাগলো।
সাইকো। টার্গেট বাকি ৩ জন।

আত্মপ্রকাশ নির্বাচিত গল্প প্রতিযোগিতা – ১ এ প্রথম স্থান অর্জনকারী ‘সোমা ও মিনি‘ ভৌতিক ছোটগল্পটি পড়তে ক্লিক করুন >> সোমা ও মিনি । সানজিদা প্রীতি । আত্মপ্রকাশ নির্বাচিত গল্প

সাইকো সিরিয়াল কিলার ০৭ । আত্মপ্রকাশ নির্বাচিত গল্প । লেখক পরিচিতি

লেখকঃ মোঃ টুটুল ইসলামের
ছোটগল্পঃ সাইকো সিরিয়াল কিলার ০৭
গল্পের জনরাঃ থ্রিলার
দেশের বাড়িঃ চাঁদপুর
পড়াশোনাঃ ঢাবি অধিভুক্ত ৭ কলেজে পড়াশোনা করছি, ২০১৮।

মোঃ-টুটুল-ইসলাম-Md-Tutul-Islam-attoprokash-writter-min
লেখকঃ মোঃ টুটুল ইসলাম

নিজের ব্যাপারে বলতে গেলে বলবো। খুবই নিছক সাধারণ মানুষের মতো থাকতে খুবই ভালোবাসি। নিজেকে কখনোই জাকজমকতায় পছন্দ করিনা। শখের বশে জাদু করি। এবং মাঝে মাঝে কি বোর্ডে কিছু অক্ষর লিখি। এই বেঁচে থাকতে হবে বলেই বেঁচে থাকা।

আত্মপ্রকাশ সম্পাদক

http://attoprokash.com

আত্মপ্রকাশে অপ্রকাশিত গল্প এবং বুক রিভিউ এবং প্রবন্ধ প্রকাশ করতে যোগাযোগ করুন (ইমেইল-attoprokash.blog@gmail.com) অথবা ফেইসবুক পেইজ ইনবক্স। সর্বনিম্ন ১০০০ শব্দ হতে যেকোনো ঊর্ধ্ব সীমার ছোট গল্প গ্রহণযোগ্য। আপনার গল্প আত্মপ্রকাশ বিচারকদের দ্বারা নির্বাচিত হলে আপনাকে জানানো হবে এবং তা সরাসরি প্রকাশ করা হবে আত্মপ্রকাশে। আপডেট জানতে ফেইসবুক গ্রুপে সক্রিয় থাকুন।

3 Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *